কলকাতা থেকে এক সময় ‘বিতাড়িত’ বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে পুনরায় ফেরাতে চায় বিজেপি। এ লক্ষ্যে এবার রাজ্যসভায় তসলিমার হয়ে সুর চড়ালেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।

আজ সোমবার সংসদে দাঁড়িয়ে বিজেপি নেতা বলেন, তসলিমার প্রত্যাবর্তন হোক। বাংলার নারী আন্দোলনের নতুন সূর্যোদয় হোক। শমীকের দাবি, তসলিমা নাসরিনের কাছে কলকাতা প্রাণের শহর। তিনি কলকাতায় ফিরে আসতে চান, বাংলায় কথা বলতে চান, বাংলায় সাহিত্য সৃষ্টি করতে চান। পশ্চিমবঙ্গ মানে কাজী নজরুলের শ্যামা-মায়ের বর্ণনা, নারী আন্দোলনের পটভূমি। আমি বলতে চাই, আত্মসমর্পণের দিন শেষ হোক। তসলিমার প্রত্যাবর্তন হোক। বাংলার নারী আন্দোলনের নতুন সূর্যোদয় হোক।

বর্তমানে রয়েছেন দিল্লিতে তসলিমা। ২০২৪ এর জুলাই মাসে ভারতে থাকা রেসিডেন্স পারমিট শেষ হয়ে যায় তার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শায়ের কাছে মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানান তিনি। তার দাবি মেনে বাড়ানো হয় রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ। তবে ২০০৭ সালের পর তার আর ফেরা হয়নি কলকাতায়।

ভোটের মুখে বিতর্কিত এই লেখিকাকে কলকাতায় ফেরানোর দাবি বিজেপির ‘মাস্টার্স স্ট্রোক’ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মমতাবিরোধী লড়াইয়ে মমতার কোর মুসলিম ভোট ব্যাংক ও মুসলিম মৌলবাদের কড়া সমালোচক তসলিমা নাসরিনকে গেরুয়া শিবির নির্বাচনী হাতিয়ার করতে চলেছে  বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তসল ম কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ