পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে পিটিয়ে আহত করার ৩৫ দিন পর মৃত্যু হলো সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার শাহরিয়ার হোসেন তুরানের। তিনি উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গোয়ালচাতর গ্রামের মৃত আবদুল হামিদ সরদারের ছেলে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের গোয়ালচাতর গ্রামের নিজ বাড়িতে তুরান মারা যান।

তুরানের চাচা আবদুর রশিদ সরদার জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে তুরান উপজেলার কাজীরহাট বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলামের দোকানে পাওনা টাকা চাইতে যান। এ সময় মনিরুল টাকা দেবেন না বলে টালবাহানা শুরু করলে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাজারের লোকজন এসে তাদের থামিয়ে দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তুরানের দোকানের সামনে গিয়ে তাকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন মাংস ব্যবসায়ী মনিরুল। এতে তুরান গুরুতর জখম হন এবং মাটিতে পড়ে যান। বাজারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

আবদুর রশিদ সরদার জানান, মাথায় আঘাতের কারণে তুরান ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে স্ট্রোক করেন। তাৎক্ষণিক তাঁকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে উন্নতি না হওয়ায় খুলনা সিটি হাসপাতালে ভর্তি করে মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখান থেকে বাড়ি আসার পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তুরান। পুলিশ লাশ মর্গে পাঠিয়েছে।

এ বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী মনিরুলের ব্যবসায়ী অংশীদার মফিজুল ইসলাম ও কাজীরহাট বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আসানুর রহমান বলেন, মনিরুলের কাছে পাওনা ২০ হাজার টাকা নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে মনিরুল গিয়ে তুরানের মাথায় আঘাত করেন। তুরান স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

কাজীরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় তিনি পার্শ্ববর্তী শার্শা উপজেলার নাভারণে ছিলেন। ফোনে টাকা নিয়ে মারধরের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। পরে কোনো পক্ষ তাঁকে কিছু জানায়নি। ফলে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।

মনিরুল উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের কাউরিয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় মনিরুল বা তাঁর বাবা কারও সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

কলারোয়া থানার ওসি সামসুল আরেফিন জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল উপজ ল র ক ল ইসল ম ব যবস য় মন র ল

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ