ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা ও লুটের ঘটনায় আন্তজেলা ডাকাত দলের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১৩ ভরি সোনা, সোনা বিক্রির ৭৬ হাজার টাকা ও ডাকাতির সময় ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার আশুলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো.

আনিসুজ্জামান। এ সময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মো. তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির, আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের মো. রিপন মিয়া (৪০), পাবনার সুজানগর থানার মো. আরিফ প্রামাণিক (৩০), দুই ভাই আতাইকুলা থানার মো. শাহ আলম (৪৫) ও মো. আরমান শেখ (৩৭), রাজশাহীর কর্ণহার থানার মো. ইব্রাহিম বাবু (৪৫) ও কুমিল্লার দেবীদ্বার থানার মো. মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ (৪৫)।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি মো. আনিসুজ্জামান জানান, ৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে নয়ারহাট বাজারে দিলীপ স্বর্ণালয়ের সামনে ওই দোকানের মালিক দিলীপ দাসকে তাঁর স্ত্রীর সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সোনার ব্যাগ লুট করে নিয়ে যান ডাকাত দলের সদস্যরা।

পুলিশ জানায়, ওই রাতে ইমরান, শাহ আলম, আরমান, রিপন, আরিফ, আকাশ, তালিম ও মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ একটি ভাড়া গাড়িতে করে নয়ারহাট এলাকায় সোনার দোকানে ডাকাতি করতে আসেন। ইমরান ও আকাশ গাড়ির ভেতরে অবস্থান করেন এবং আরমান ও শাহ আলম ঘটনাস্থলের পাশে পাহারা দেন। তালিম ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করেন। রিপন ও আরিফ দুটি চাপাতি দিয়ে দিলীপের বুকের ডান পাশে ও ঘাড়ে কোপ দেন এবং মাসুদ রানা সোনার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গাড়িতে করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। আরিফকে গত সোমবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া ৮ ভরি সোনা ও সোনা বিক্রির ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে ডাকাতির সোনা ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ইব্রাহিমকে রাজশাহীর কর্ণহাট এলাকা থেকে লুণ্ঠিত পাঁচ ভরি সোনাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আরমানের ফলের দোকান থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।

এসপি মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ইমরান, আরমান ও শাহ আলম দিনের বেলায় ফলের ব্যবসার আড়ালে ডাকাতির স্থান নির্বাচন করেন ও রাতে ডাকাতি করেন। রিপন ও আরিফ দিনের বেলা অটোবিকশা চালান, রাতে ডাকাতি করেন। মো. ইব্রাহিম বাবু ডাকাতির সোনা ক্রয়-বিক্রয় করেন। তাঁরা সবাই পেশাদার ডাকাত। তিনি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় ডাকাতির মামলা আছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হ আলম আরম ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ