দেশের ১১৬তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’
Published: 19th, March 2025 GMT
দেশের ১১৬তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’ নামে নতুন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার (১৭ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদন দেয়।
গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি হচ্ছে ঢাকায়। এর ঠিকানা বাড়ি-৬, মেইন রোড, দিয়াবাড়ী দক্ষিণ, তুরাগ, ঢাকা।
আরো পড়ুন:
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক: প্রধান উপদেষ্টা
মার্কিন সিনেটরকে প্রধান উপদেষ্টা
সীমিত সংস্কারে ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব
প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো.
বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদনপত্রে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’ স্থাপনের জন্য আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী সাময়িক অনুমতি দেওয়া হলো।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে-
• সাময়িক অনুমোদনের মেয়াদ ৭ বছর।
• বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর বিধান ও শর্ত মেনে চলতে হবে।
• পাঠদানের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, মিলনায়তন, সেমিনার কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষার্থীদের পৃথক কমনরুম এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকতে হবে।
• বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া করা ভবন থাকতে হবে।
• কমপক্ষে তিনটি অনুষদ এবং ছয়টি বিভাগ থাকতে হবে।
• শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন প্রয়োজন।
• প্রত্যেক বিভাগ, প্রোগ্রাম ও কোর্সের জন্য ইউজিসির নির্ধারিত সংখ্যক পূর্ণকালীন যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
• বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে অন্তত ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে যেকোনো তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখতে হবে এবং সরকারের অনুমতি ছাড়া লভ্যাংশ উত্তোলন করা যাবে না।
• বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপে জড়িত হতে পারবে না।
• সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ বা এ ধরনের কোনো তৎপরতায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত হতে পারবে না।
• শুধু ইউজিসি অনুমোদিত অনুষদ, বিভাগ ও কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে এবং ক্যাম্পাসভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
• সরকার ও ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া কোনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাবে না।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ১১৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেলেও কার্যক্রম শুরু করেনি।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ