ইফতারে রাখতে পারেন সুস্বাদু দম পায়া হালিম মিক্স। এই রেসিপি তৈরিতে আপনার বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় ব্যায় করতে হবে। তবে ধাপে ধাপে কাজগুলো এগিয়ে রাখলে সহজেই তৈরি করে নিতে পারবেন দম পায়া হারিম মিক্স। রইলো রেসিপি।
উপকরণ:
হালিম মিক্স: ২ কাপ
গরুর পায়া: ২ কেজি
তেল: আধা কাপ
ঘি: ২ টেবিল চামচ
আটা: ৫০০ গ্রাম
গোলমরিচের গুঁড়া: ১ টেবিল চামচ
আদাবাটা: ২ টেবিল চামচ
রসুনবাটা: ২ টেবিল চামচ
মরিচের গুঁড়া: ২ টেবিল চামচ
পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
হালিম মসলা: ২ টেবিল চামচ
বেরেস্তা: ৪ টেবিল চামচ
তেঁতুল মাড়: ৪ টেবিল চামচ
পাঁচফোড়ন: ১ টেবিল চামচ
লবণ স্বাদমতো
আরো পড়ুন:
ইফতারে থাকুক তোকমা আনার জুস
ইফতারে থাকুক মুরগির হালিম
প্রথম ধাপ: শুরুতে একটি পাত্রে হালিম মিক্স ২০ মিনিটের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
দ্বিতীয় ধাপ: একটি পাত্রে গরুর পায়া নিয়ে তাতে কাটা পেঁয়াজ, তেল, আদাবাটা, মরিচের গুঁড়া, রসুনবাটা, হালিম মসলা ও লবণ দিয়ে ম্যারিনেট করে নিন। এবার এক ঘণ্টার জন্য রেখে দিন। তারপর আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা হালিম মিক্স মেশান। এ পর্যায়ে ৩ লিটার পানি দিয়ে দিন। আটা দিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করে দিন, যাতে ভাঁপ বেরিয়ে যেতে না পারে। পাত্রটি চুলায় বসান। এবং ১৫ মিনিট উচ্চতাপে রান্না করে নিন। এবার আঁচ কমিয়ে আরও ৩ ঘণ্টা রান্না করুন। তারপর পাত্রের মুখ খুলে সবকিছু ভালো করে নেড়ে নিন।
তৃতীয় ধাপ: আরেকটি পাত্রে ঘি দিয়ে ফোড়ন দিন। এবার ৩ টেবিল চামচ তেঁতুলের মাড় মিশিয়ে দিন।
শেষে পেঁয়াজ বেরেস্তা ও তেঁতুলের মাড় দিয়ে পরিবেশন করুন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলার দৃশ্যমান উন্নতি ঘটাতেই হবে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মূল চ্যালেঞ্জ যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, তফসিল ঘোষণার এক দিনের মাথায় ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তা আরও স্পষ্ট হলো। গত শুক্রবার দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে গুলি চালায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।
হাদিকে যে পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট। খোদ রাজধানীতেই প্রকাশ্যে দিনের বেলা একজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে গুলি করার ঘটনায় অন্যান্য প্রার্থী ও নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা ও ভয় ছড়িয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়ে কেউ যেন নির্বাচনী পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত না করতে পারে, সেটা নিশ্চিতের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না।’ গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীকে গুলির এই ঘটনায় নাগরিকদের মধ্যে এই শঙ্কাও তৈরি হয়েছে যে নির্বাচনী পরিবেশ বানচাল করতে কিংবা নির্বাচন পেছাতে কোনো গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
নির্বাচনপূর্ব সহিংসতা বাংলাদেশে সব সময় ঘটে থাকলেও এবারের পরিস্থিতি যেকোনো বারের চেয়ে নাজুক। কেননা ভেঙে পড়া পুলিশি ব্যবস্থা এখনো আগের অবস্থানে ফেরেনি, গোয়েন্দা–ব্যবস্থাও এখনো পুরোদমে সক্রিয় নয়। অভ্যুত্থানের আগে–পরে দেশের বিভিন্ন কারাগার ভেঙে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী ও জঙ্গি পালিয়ে যান, জামিনও পান। বিভিন্ন থানা, ফাঁড়ি ও কারাগার থেকে খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের অনেকটাই উদ্ধার করা যায়নি।
এ ধরনের পরিস্থিতি যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যই বড় হুমকির কারণ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চাঁদাবাজি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জড়িত থাকার বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করে। নভেম্বর মাসে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় একের পর এক টার্গেটেড হত্যাকাণ্ড ঘটে। চট্টগ্রামে একজন সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রচার চলাকালে সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর এক তরুণকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীও আহত হন।
তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না হলে নির্বাচনী পরিবেশের ওপর তার ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে বারবার গণমাধ্যম ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা সরকারকে সতর্ক করে এসেছেন। আমরা মনে করি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতির জন্য সরকার যে ১৬ মাস সময় পেয়েছে, সেটা যথেষ্ট। দুঃখজনক হলেও সত্যি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতিতে সরকারের দিক থেকে কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা নিয়ে শিথিলতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতে সশস্ত্র বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর ৯ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন, এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ফলে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সম্ভাব্য প্রার্থীর ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল—সবার জন্যই সতর্কবার্তা। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিশেষ অভিযান শুরুর কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, সম্ভাব্য প্রার্থীরা যাতে ভয়হীন পরিবেশে প্রচার চালাতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের।