ডব্লিউএইচওর পরিচালক হতে বিএসএমএমইউতে শিক্ষকতার ভুয়া যোগ্যতা দেখান সাময়া ওয়াজেদ
Published: 20th, March 2025 GMT
সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক বিএসএমএমইউ) শিক্ষকতার মিথ্যা দাবি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগের আবেদন করেছিলেন এবং পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন অভিযোগ করে মামলা করেছে দুদক। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ২০টি ব্যাংকের সিএসআর ফান্ড থেকে ৩৩ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মো.
দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলা দুটি করেন। সায়মা ওয়াজেদ ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নির্বাচিত হন তিনি। গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। পাঁচ বছরের জন্য তিনি এই পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক পদে নিয়োগের জন্য সিভিতে ২০২৩ সালে বিএসএমএমইউয়ে শিক্ষকতা, শিক্ষা ম্যানুয়াল কার্যাক্রমে অংশগ্রহণ এবং অটিজম ও মানসিক সমস্যাসংক্রান্ত কারিগরি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু বিএসএমএমইউয়ে তাঁর শিক্ষকতা এবং এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনো তথ্য নেই। পরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য সিভিতে জাল–জালিয়াতির মাধ্যমে মিথ্যা ও ভুয়া যোগ্যতা দেখিয়ে আবেদন করেন বলে অনুসন্ধানে তথ্য পাওয়া গেছে।
অপর মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে সায়মা ওয়াজেদ ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম সূচনা ফাউন্ডেশনকে ২০টি ব্যাংক থেকে ৩৩ কোটি ৫ লাখ টাকা দিতে বাধ্য করেন। ২০১৪ সালে সায়মাকে দুই বছরের জন্য সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান করা হয়। পরে ২০১৭ সালে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ অটিজম ও স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যা নিরসনে গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির কার্যাবলি সম্পাদনে সহায়ক ও পরামর্শ প্রদানের জন্য গঠিত জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা