বগুড়ায় ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 20th, March 2025 GMT
বগুড়ায় ছয় দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন ও মহাসড়ক অবরোধ করে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে বগুড়া শহরের শেরপুর সড়কে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
সকাল থেকে শেরপুর সড়কে অবস্থানের পর দুপুর থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বনানী মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের কর্মসূচির কারণে কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েন শহরবাসী। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পথচারী ও যান চালকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। পরে বেলা তিনটার দিকে সেনাসদস্যরা অবরোধকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকাল ১০টার দিকে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে শেরপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বগুড়াগামী কোচ ও ঠনঠনিয়া কোচ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার কোচ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকা পড়ে। এতে দুপুর পর্যন্ত শহরজুড়ে দীর্ঘ যানজটের তৈরি হয়।
বেলা একটার দিকে শহরের বেসরকারি বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও অবরোধে যোগ দেন। এ সময় তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরতলির বনানী মোড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে শত শত বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। বেলা তিনটার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে ছয় দফা দাবিতে সড়কে নেমেছেন। দাবিগুলো হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদসহ দেশের কারিগরি সব পদে শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দেওয়া, কারিগরি (পলিটেকনিক ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রাইভেট খাতে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ, কারিগরি শিক্ষা বাড়ানোর জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়েও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ এবং জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে অবিলম্বে ৩০ শতাংশ ক্রাফট কোটা বাতিল করা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইনস ট র ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ