করোনার সময়ে একটি দলকে চারের পরিবর্তে সর্বোচ্চ পাঁচজন বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামানোর সুযোগ দেওয়া হয়। ফুটবলের আইন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি) এই নিয়ম অনুমোদন করার পর ২০২১ সালে তা স্থায়ীভাবে কার্যকর করে ফিফা।

কিন্তু আজ কলম্বিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে পাঁচ নয়, সাত বদলি নামিয়েছে ব্রাজিল। এ নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে কি ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র ফিফার নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত দুই বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামিয়েছেন?

উত্তর হচ্ছে ‘না’। দরিভাল নিয়মের মধ্যে থেকেই বেঞ্চে থাকা সাতজনকে খেলিয়েছেন।

ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্চা অ্যারেনায় আজ ম্যাচের প্রথমার্ধ ১–১ সমতায় শেষ হয়। যোগ করা সময়ের অন্তিম মুহূর্তে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোলে জেতে ব্রাজিল।

দলের হয়ে জয়সূচক গোল করার পরপরই মাঠ ছাড়েন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ভিনিসিয়ুস। তাঁর পরিবর্তে ক্ষণিকের জন্য নেমে ব্রাজিলের জার্সিতে অভিষেক হয় ফ্লামেঙ্গোর সেন্টার–ব্যাক লিও ওরতিজের। ম্যাচে ওরতিজই ছিলেন শেষ এবং ব্রাজিলের সপ্তম বদলি।

এর আগে বদলি নেমেছেন জোয়েলিন্তন, মাথেউস কুনিয়া, সাভিনিও, আন্দ্রে, ওয়েসলি ফ্রাঙ্কা ও বেন্তো। তাঁদের জায়গা দিতে গেরসন, জোয়াও পেদ্রো, রদ্রিগো, ব্রুনো গিমারায়েস, ভান্দেরসন ও আলিসন বেকারকে উঠে যেতে হয়। মূলত গোলকিপার আলিসনের কারণেই সাত বদলি খেলাতে পেরেছে ব্রাজিল।

৬৯ মিনিটে একটি ফ্রি–কিক শট পাঞ্চ করে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার দাভিদসন সানচেজের মাথার সঙ্গে গোলকিপার আলিসনের মাথা সজোরে ধাক্কা লাগে। দুজন সঙ্গে সঙ্গে মাঠে লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় প্রায় ১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। দুজনকেই মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা আর নামতে পারেননি।

ফিফার কনকাশন প্রটোকলে বলা হয়েছে, কোনো দলের একজন খেলোয়াড় মাথায় আঘাতজনিত চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে তাঁর সঙ্গে অতিরিক্ত আরও একজনকে খেলানো যাবে। এ কারণেই মাথায় আঘাত পাওয়া গোলকিপার আলিসনের পরিবর্তে নামেন বেন্তো এবং শেষ দিকে ভিনির পরিবর্তে নামেন ওরতিজ।

এই নিয়ম অনুযায়ী শুধু ব্রাজিলই নয়, কলম্বিয়ারও সাত বদলি নামানোর সুযোগ ছিল। কারণ, তাদের ডিফেন্ডার সানচেজও মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তবে দলটির কোচ নেস্তর লরেঞ্জো বেঞ্চ থেকে নামিয়েছেন চারজনকে।

আরও পড়ুনঅবশেষে ভিনির ‘হলুদ রাইফেল’ থেকে ছুটল ‘গুলি’১ ঘণ্টা আগে

ঘরের মাঠে আজকের জয়ের পর দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের (কনমেবল) বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে ব্রাজিল। ১৩ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ২১। ব্রাজিলের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

ব্রাজিলের পরেই ম্যাচ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই। বুয়েনস এইরেসের মাস মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আগামী বুধবার সকালে মুখোমুখি হবে দুই দল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ