ঝালকাঠির নলছিটির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবিতে নিখোঁজের ৩ দিন পর শিশু রায়হান মল্লিক (৯) এর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে খয়রাবাদ নদীর দপদপিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় স্থানীয়রা ওই শিশুর ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে ৯৯৯ তে কল দেয়। পরে নলছিটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি ইউনিট ও নৌ পুলিশ এসে নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

জানা যায়, গত ১৮ মার্চ ভোরে প্রতিবেশী‌ বিপ্লব হাওলাদারের সঙ্গে নদীতে মাছ ধরা দেখতে গৌরিপাশা গ্রামের তার বাড়ি সংলগ্ন সুগন্ধা নদীতে যায় শিশু রায়হান মল্লিক। নদীতে জাল ফেলার পরে নৌকায় অপেক্ষা করতে থাকে শিশুটি। এ সময় বরগুনাগামী  মিতালী-৫ লঞ্চ নৌকাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে  নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। জেলে বিপ্লব সাঁতরে অন্য নৌকায় উঠতে পারলেও শিশু রায়হান নদীতে ডুবে নিখোঁজ হয়ে যায়। খবর পেয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান চালালেও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে পার্শ্ববর্তী খয়রাবাদ নদীর দপদপিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় শিশুটির মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

শিশু রায়হান মল্লিক গৌরিপাশা এলাকার মো.

আলী মল্লিকের ছেলে। 

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম জানান, শিশুর মরদেহ  ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/অলোক/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ