রংপুরে সাংবাদিককে মারধর: তিন পুলিশ প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন
Published: 21st, March 2025 GMT
রংপুরের বদরগঞ্জে সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগসহ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন বদরগঞ্জ থানার এএসআই রবিউল আলম, কনস্টেবল আল-আমিন হোসেন ও মজিবুর রহমান।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম এম এ সালাম বিশ্বাস। তিনি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বাঁ হাতে ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন।
এর আগে গত বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে বদরগঞ্জ থানার মূল ফটক থেকে ১০০ গজ দূরে থানার ভেতর থেকে পুলিশের একটি পিকআপ এসে থামে। পিকআপ ভ্যানের ভেতরে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিজেরা বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করেন এম এ সালাম বিশ্বাস। এ সময় কনস্টেবল আল-আমিন তাকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন। একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি থেকে তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এরপর তাকে তারা থানায় নিয়ে যান এবং ওসির সামনে আবারও মারধর করেন। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় থানা থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রংপুরের স্থানীয় সাংবাদিকরা অভিযুক্ত ওসিসহ পুলিশ সদস্যের বিচারের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপরই রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম এ ঘটনায় ৩ পুলিশকে প্রত্যাহার করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর প ল শ সদস য বদরগঞ জ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।