নারায়ণগঞ্জে যুবদলের পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী ও সামর্থ্যহীনদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে ক্ষুব্দ হয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।  

শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জের মাসদাইরে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশের পর ক্ষুব্দ হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তিনি। পরে তাকে ম্যানেজ করে অনুষ্ঠানস্থলে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেন আয়োজকরা। 

সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনুষ্ঠানকে ঘিরে একদিন আগে থেকে পুরো বিদ্যালয় এলাকা দলীয় ব্যানার ফেস্টুন ও ছবি দিয়ে ভরে ফেলেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানকে ঘিরে শৃঙ্খলা রক্ষায় নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বিশেষ পোশাকসহ নিয়োজিত করেন। 

কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতির গাড়ির পাশে থাকা একাধিক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় সভাপতি মূলত চেয়েছিলেন যেহেতু তারেক রহমানের ঈদ উপহার পৌছে দেয়া হয়ে তাই প্রান্তিক স্থানে অনুষ্ঠানটি হোক বা কোন খোলা স্থানে অনুষ্ঠানটির আয়োজন হোক। তবে তিনি এখানে এসে দেখেন একটি বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। পুরো অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে স্কুল ঢেকে ফেলা হয়েছে। 

স্কুলে যুবদলের কিছু নেতাকর্মী বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক পোশাকের পাশাপাশি ওয়াকিটকি ব্যবহার করছেন। সবকিছু মিলিয়ে স্কুলের ভেতরে তার গাড়ি প্রবেশের সময় তিনি স্কুলে অনুষ্ঠানে না গিয়ে ক্ষুব্দ হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে যান। 

জানা যায়, পুরো স্কুলের সকল ব্যানার ফেস্টুনে শুধুমাত্র জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির নাম ছিল। স্কুলে আয়োজনের মূল পরিকল্পনাও ছিল রনির তাই তার উপরও ক্ষুব্দ হন কেন্দ্রীয় সভাপতি।

পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে চলে গেলে সেখানে জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক খাইরুল ইসলাম সজীব ও সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি তার কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাকে অনুরোধ করেন অনুষ্ঠানস্থলে ফিরে যেতে।

ক্ষুব্ধ যুবদল কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে যান নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে। সেখান থেকে প্রায় দুই ঘন্টা পরে পুনরায় অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। সেখানে দেয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে তিনি বলেন, আমি চেয়েছিলাম অনুষ্ঠানটি প্রত্যন্ত এলাকায় করতে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী বিতরণ করতে কিন্তু এখানে এসে দেখি শহরে অনুষ্ঠানটি করা হয়েছে। আমার জন্য অনেকক্ষু আপনাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে এজন্য আমি দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।

নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে উপস্থিত একাধিক যুবদল নেতা জানান, যুবদল কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির উপর প্রচন্ড ক্ষোভ ঝাড়েন এবং এই উপহার সামগ্রী বিতরণকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মশিউর রনির চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে চান।

এ সময় মশিউর রহমান রনি নানাভাবে বুঝিয়ে যুবদল সভাপতিরে শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং এজন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওত হোসেন খানকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আসেন। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত যুবদল সভাপতিকে অনেকক্ষু বুঝিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে নিয়ে আসেন বলে জানিয়েছেন একাধিক যুবদল নেতা।

এদিকে যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না রাগ করে চলে যাওয়া এবং ফিরে আসার এই নাটকীয় ঘটনার কারণে উপহার নিতে আসা গরিব অসহায় মানুষগুলোকে প্রায় দুই ঘন্টা অতিরিক্ত সেখানে বসে থাকতে হয়। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকরা এ বিষয়ে যুবদল সভাপতি মুন্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে দ্রুত অনুষ্ঠানিস্থল ত্যাগ করেন। তখন স্থানীয় সাধারণ মানুষকে বলতে শোনা যায় "তারা ক্ষমতায় আসার আগেই এগারোটার ট্রেন একটায় ছাড়ে, ক্ষমতায় আসলে না জানি কখন ছাড়বে!
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: য বদল য বদল ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ক ষ ব দ হয় ন ত কর ম অন ষ ঠ ন য বদল র উপহ র

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • পরিবার নিয়ে চীন ভ্রমণে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা
  • নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
  • নারায়ণগঞ্জে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি গ্রহন