আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এখনই ফ্যাসিবাদী দলকে পুনর্বাসন করার অপচেষ্টা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।

আজ শনিবার ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আমেলার নিয়মিত বৈঠকে সৌদি আরব থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর।

চরমোনাই পীর বলেন, বিচারের আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের আলাপ অনৈতিক। এই ধরনের আলাপ-আলোচনা দেশ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যে অপরাধ করেছে তার দায় কেবল ব্যক্তি ও ব্যক্তিদের ওপরে চাপিয়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর মাধ্যমে গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। আর কোনো ফ্যাসিবাদ যাতে জন্মাতে না পারে, সে জন্য দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণ্য করে না জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে করণীয় নীতি-আদর্শ আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

দলের নিয়মিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ইমতেয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব আহমাদ আব্দুল কাউয়ুম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ, লোকমান হোসেন জাফরি, এ বি এম জাকারিয়া, শওকত আলী, কেফায়েত উল্লাহ কাশফি, নুরুল করীম আকরাম, খলিলুর রহমান, হারুনুর রশিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, হাসিবুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, আল মুহাম্মাদ ইকবাল, জি এম রুহুল আমীন, হেমায়েতুল্লাহ, রেজাউল করীম আবরার, শামসুদ্দোহা আশরাফি, নাছির উদ্দিন ও শেখ মুহাম্মাদ নুরুন নাবী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চরম ন ই প র ল কর ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়। 

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।

প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।

তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।

বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।

সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।

জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”

বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”

তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”

তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ