কারান্তরীণ গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) সাবেক কমিশনার মোল‍্যা নজরুল ইসলামকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার নামে থাকা দুইটি ফ্ল্যাটসহ স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে । যার বাজার মূল্য এক কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার ৫৪০ টাকা। একইসঙ্গে তার নামে থাকা ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩০৬ টাকার শেয়ার অবরুদ্ধেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে  এ আদেশ দেন। 

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেন, “পৃথক দুই আবেদনে সাবেক কমিশনার মোল‍্যা নজরুল ইসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ এবং শেয়ার অবরুদ্ধের আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন দুটি মঞ্জুর করেছেন।”

জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর আফতাব নগরে ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬০ টাকা মূল্যের আড়াই কাঠার প্লট, বাড্ডার পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটিতে ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৫ টাকা মূল্যের চার কাঠা প্লট, নারায়ণগঞ্জে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের ৬ দশমিক ৩৫ কাঠা জমি ও রামপুরায় এক কোটি ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ২০০ টাকা মূল্যের দুটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট রয়েছে। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের সহকারী পরিচালক মো.

নাছরুল্লাহ হোসাইন এ দুটি আবেদন করেন।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, মোল্যা নজরুল ইসলাম দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।  সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।

সম্পত্তি জব্দ ও শেয়ার অবরুদ্ধের আবেদনে বলা হয়, মোল্যা নজরুল ইসলাম একজন পাবলিক সার্ভেন্ট হয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯৪ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে। আসামি তার সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। মামলা নিষ্পত্তির পূর্বে এসব স্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। এসব স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করে রিসিভার নিয়োগ করা একান্ত প্রয়োজন।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা পুলিশের সহায়তায় সারদার পুলিশ একাডেমি থেকে মোল্যা নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন ৯ ফেব্রুয়ারি তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

ঢাকা/মামুন/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ য় র অবর দ ধ নজর ল ইসল ম র ল ইসল ম দ শত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ