খুলনার তেরখাদা থেকে গতকাল রোববার উদ্ধার করা মরদেহের পরিচয় মিলেছে। নিহত নারীর নাম সাকিরন বেগম (৪৫)। স্ত্রীর মর্যাদা ও টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী আনিচ সরদার ও দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

তেরখাদা থানা পুলিশ জানায়, গতকাল রোববার সকালে খুলনার তেরখাদার বিজয়নগর গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রোববার রাতে নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকা থেকে স্বামী আনিচ সরদার, তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগম ও আকছির সরদারকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ২০০৮ সালে সাকিরন বেগমের স্বামী মারা গেলে তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি খুলনা নগরীর বয়রা এলাকায় তার ভাইয়ের বাসায় থাকতেন। ২০১৭ সালে কালিয়া এলাকার আনিচ সরদারের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে আনিচ তাকে বিয়ে করেন। পরে আনিচ তাকে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বললে তিনি রাজি হন। তার কাছে গচ্ছিত টাকা দিয়ে ২০১৯ সালে সাকিরন সৌদি আরবে যান। সৌদি থাকা অবস্থায় আনিচকে বিভিন্ন সময় মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাঠান সাকিরন।

পুলিশ আরও জানায়, ২০২০ সালে সাকিরন দেশে ফিরে জানতে পারেন আনিচ আঙ্গুরা বেগমকে বিয়ে করেছেন। তিনি আনিচের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করেন। কিন্তু আনিচ তাকে অস্বীকার করেন এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সাকিরন তার ভাইসহ স্থানীয় লোকজনকে জানালে তাদের মধ্যস্থতায় আনিচ গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা ফেরত দেবে বলে অঙ্গীকার করেন। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার বিকেলে সাকিরন বেগম টাকা নেওয়ার জন্য নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকায় আনিচ সরদারের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রাতে সাকিরনের মেয়ে তানজিলা আক্তারকে আনিচ সরদার ফোন করে জানান যে, সাকিরনকে আনিচের ভাই, মা, স্ত্রী ও শ্বশুর মারধর করেছেন। তাকে এসে না নিয়ে গেলে তারা খুন করে ফেলবে। তারপর থেকে সাকিরনের মোবাইল ফোন ছিল। রোববার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মোবাইল চুরির সন্দেহে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩

পাবনায় মোবাইল ফোন চুরি করার সন্দেহে রাসেল হোসেন (৩১) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার মামাত ভাইদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

শনিবার (১৪ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার জাফরাবাদ এলাকায় তাকে হত্যা করা হয়। নিহত রাসেল হোসেন জাফরাবাদ এলাকার নজির উদ্দিনের ছেলে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সুনামগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত

দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার (১৪ জুন) রাতে রাসেলের মামাত ভাই জাফরাবাদ এলাকার মকবুল হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়। মোবাইল চুরির ঘটনায় রাসেলকে সন্দেহ করে একই এলাকার তানজিল হোসেন নামে এক যুবক রাসেলকে মোবাইল ফোন সেটটি ফেরত দিতে বলেন। এতে রাসেল চুরির কথা অস্বীকার করে ক্ষুব্ধ হয়ে তানজিলকে মারধর করেন। এরই জের ধরে তানজিলের স্বজন ও মকবুলের সহযোগীরা রাসেলদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে রাসেলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে রাসেলের মৃত্যু হয়।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিহত রাসেলের বোন অঞ্জনা খাতুন বলেন,  ‘‘তাদের এলাকার সাইফুলের পরিত্যক্ত সেমাই কারখানার কলা গাছ থেকে কলা কাটাকে কেন্দ্র করে মামাত ভাই মকবুলদের সঙ্গে রাসেলের বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’’ 

এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজন মহিলাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলায় তাদের অভিযুক্ত করা হলে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হবে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানাতে অস্বীকৃতি জানান ওসি। 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ