পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদের বোনাস ও অন্যান্য সুবিধার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা। কিন্তু শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কিছু জানানো না হলেও শ্রমিকেরা বিকেল চারটার মধ্যে দাবি পূরণের আলটিমেটাম দিয়েছেন, তা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

শ্রম ভবনের সামনে আজ সকাল থেকেই কর্মকর্তাদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। নিরাপত্তাকর্মী সাকিব হোসেন জানান, কয়েকজন কর্মকর্তা ভবনে এসেছিলেন, কিন্তু অবস্থানকারী শ্রমিকদের দেখে ফিরে গেছেন। শ্রমিকেরা জানান, পাঁচ দিন ধরে তাঁরা ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেডের সিনিয়র সুইং অপারেটর রেখা আক্তার তিন্নি বলেন, ‘আজ আমাদের দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।’

অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট, টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের শতাধিক শ্রমিক এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। শ্রম ভবনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা না হওয়ায় তাঁদের ক্ষোভ বাড়ছে।

স্টাইল ক্রাফটের সুইং অপারেটর সালমা আক্তার অভিযোগ করেন, ভবনে তালা লাগানো থাকায় নারীদের টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা নেই। রাতে আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই পোশাকে দিন কাটাতে হচ্ছে। অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের রিয়াজুল হক বলেন, বকেয়া বেতন, বোনাস ও ছুটির টাকা-কিছুই দেওয়া হয়নি। নারী-পুরুষ সবাই এখানেই আটকে আছেন।

দুপুরে অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের কিছু শ্রমিককে আংশিক বোনাস দেওয়া হলেও তাঁরা পুরো বোনাস পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন। অ্যাপারেল আর্টের প্রতিনিধি শাহিন আলম বলেন, কী হিসাবে এই টাকা দেওয়া হলো, তা জানা নেই। পূর্ণ বকেয়া না পেলে আন্দোলন চলবে।

অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেডের শেফালী আক্তার বলেন, দুই মাস ধরে দোকানে বাকি চলছে। বাড়িওয়ালা বাসা ছাড়তে বলেছেন। স্টাইল ক্রাফটের আহমেদ প্রতীক জানান, ১৪ মাসের বেতন, মাতৃত্বকালীন ভাতাও আটকে আছে। ঈদের আগে দাবি মেনে না নিলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়া হবে।

টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলসের শহিদুল ইসলাম বলেন, আলোচনার জন্য কেউ আসেননি। শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলন চলবে। শ্রমিকনেতারা সতর্ক করেছেন, বকেয়া পরিশোধ ও বোনাস নিশ্চিত না করলে অবস্থান আরও জোরালো হবে, এমনকি ঈদ উদ্যাপন শ্রম ভবনের সামনেই হতে পারে।

গত ২৩ মার্চ থেকে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এই শ্রমিকেরা। তবে গত মঙ্গলবার প্রেসক্লাব এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি থেকে সচিবালয় দিকে অগ্রসর হলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেসক্লাব এলাকায় লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন পোশাকশ্রমিক, ছাত্রসংগঠনের নেতা ও পুলিশ সদস্য আহত হন।

তার পর থেকেই আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নেন। দিন-রাত অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন তাঁরা। পরে মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য প র ল আর ট

এছাড়াও পড়ুন:

এন্ড্রু কিশোরের জন্মদিনে কনকচাঁপার আবেগভরা শ্রদ্ধা

বাংলাদেশের সংগীতের ইতিহাসে এক অনন্য নাম এন্ড্রু কিশোর। পেশাদার জীবনে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি গানে—এর মধ্যে অসংখ্য গান আজও কালজয়ী। এ জন্য শ্রোতারা ভালোবেসে তাঁকে ডেকেছেন ‘প্লেব্যাক–সম্রাট’ বলে। চলচ্চিত্রের গানে এন্ড্রু কিশোরের অন্যতম সহশিল্পী ছিলেন জনপ্রিয় গায়িকা কনকচাঁপা। তাঁরা জুটি বেঁধে উপহার দিয়েছেন অগণিত জনপ্রিয় গান। আজ মঙ্গলবার, কিংবদন্তি শিল্পীর জন্মদিনে ফেসবুকে এক আবেগমাখা পোস্টে তাঁকে স্মরণ করেছেন কনকচাঁপা।

কনকচাঁপা লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন, হে তরল সোনা মাখানো কণ্ঠের রাজা এন্ড্রু কিশোর দাদা! আমরা গর্বিত, আমাদের এন্ড্রু কিশোর আছেন! আছেন বলছি, কারণ তিনি এখনো আমাদের জীবনের অংশ—আরও বেশি আপন ও প্রয়োজনীয়।’ ফেসবুক পোস্টে কনকচাঁপা আরও লেখেন, ‘একজন এন্ড্রু কিশোর—একটি কণ্ঠ, একটি গলিত সোনার নদী। সিনেমা হলে তাঁর গান বাজলেই পুরো হল ভরে যেত আবেগে। তাঁর কণ্ঠে ছিল জাদু—যা মানুষকে ভাসাতে, কাঁদাতে, ভালোবাসতে শেখাত। যখন গাইতেন “ডাক দিয়াছে দয়াল আমারে”, তখন মনে হতো—এই পৃথিবীর প্রতি আমাদের অভিমান যেন একসঙ্গে ঝরে পড়ছে। আর যখন গাইতেন “তুমি আমার জীবন”, তখন প্রতিটি মানুষ ভাবত, এভাবেই তো প্রিয়াকে বলতে চেয়েছি আমি!’

এন্ড্রু কিশোর ও কনকচাঁপা

সম্পর্কিত নিবন্ধ