শরীয়তপুরের ডামুড্যায় দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে আটক করে পিটুনি দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ডামুড্যা বাসস্টান্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার গারফা এলাকার কৌশিক আহমেদ (৩০), শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বড় শিধুলকুড়া এলাকার কাউসার তালুকদার (২৯), মাগুরা জেলার বাসিন্দা রুবায়েত মীর (২৭) ও কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আমৌদা এলাকার শরীফ হোসেন (৩৫)। রুবায়েত মীর চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য, কৌশিক ও কাউসার পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম।

এ সম্পর্কে নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি চক্র দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছিল। মুক্তিপণ আদায় করার সময় জনতার হাতে ওই চক্রের চারজন ধরা পড়েন। তখন পুলিশ তাঁদের আটক করে। ওই চারজনের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। আর পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা এখানে কীভাবে এসেছিলেন, কোথায় কর্মরত আছেন, তা–ও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ হেফাজতে তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’

পুলিশ ও ডামুড্যা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ইকরকান্দি এলাকার জুয়েল সরদার ও ফয়সাল সরদার ডামুড্যা বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী। গতকাল রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ওই দুজন বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডামুড্যার দারুল আমান বাজার এলাকায় কয়েকজন ওই দুই ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। অপহরণকারী দুই ব্যবসায়ীর কাছে সারা দিনে কাপড় বিক্রির টাকা চান। তবে ওই দুজনের কাছে কোনো টাকা ছিল না। তখন অপহরণকারী ব্যক্তিরা মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চান। দুই ব্যবসায়ী ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। তখন অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই দুই ব্যবসায়ীকে নিয়ে মাদারীপুর শহরের লেকের পাড়ে যান। সেখানে গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারী ব্যক্তিরা চার লাখ টাকা আদায় করেন।

বাকি ছয় লাখ টাকা আদায় করার জন্য দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁরা ওই দুজনকে নিয়ে ডামুড্যা বাসস্টান্ড এলাকায় যান। সেখানে দুই ব্যবসায়ী গাড়ির ভেতর থেকে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। তখন স্থানীয় লোকজন ডাকাত বলে চিৎকার দেন। তখন অপহরণকারী ব্যক্তিরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন অপহরণকারী চারজনকে আটক করে পিটুনি দেন। পরে ডামুড্যা থানার পুলিশ সদস্যরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। ওই গাড়িতে থাকা আরও চারজন পালিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে জয় পোদ্দার নামে আরেক পুলিশ সদস্য ছিলেন।

আটক হওয়ার পর অপহরণকারী দলের সদস্য রুবায়েত মীর বলেন, ‘কাউসার তালুকদার আমাদের এখানে এনেছেন। তিনি এই মিশনে আমাদের বস। অপহরণের সময় যেই টাকা পেয়েছিলাম, তা কাউসারের কাছে। আমি আর কিছু জানি না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ই ব যবস য় ক স থ ন য় ল কজন ন অপহরণক র প ল শ সদস য উপজ ল র এল ক র চ রজন

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে অপহৃত রোহিঙ্গা উদ্ধার, আটক ৩
  • র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচার চেয়ে ফেরার পথে হামলার অভিযোগ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির নিন্দা
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার