দীর্ঘ ২৯ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে অবশেষে শেফিল্ড শিল্ড জিতল দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে কুইন্সল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে নাথান ম্যাকস্বিনির দল। অ্যাডিলেডের কারেন রলটন ওভালে ২৭০ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করে রেকর্ড গড়েছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। শিল্ড ফাইনালের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। 

দলের হয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন জেসন সাংঘা ও অ্যালেক্স কেরি। অপরাজিত ১২৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন সাংঘা, আর ১০৫ রানের দারুণ ইনিংস আসে কেরির ব্যাট থেকে। মূলত এই দুই ব্যাটারের ব্যাটিংয়েই স্বপ্নপূরণ হয় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার।  

প্রায় তিন দশক পর শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জেতার উচ্ছ্বাস সীমা ছাড়িয়ে যায় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদের মাঝে। শেষ মুহূর্তে জয় নিশ্চিত হতেই গ্যালারি ছেড়ে মাঠে নেমে আসেন দর্শকেরা। যেন আশির দশকের ক্রিকেট মাঠের চিত্র ফিরে আসে অ্যাডিলেডে। জয়ের নায়ক সাংঘা ও কেরিকে ঘিরে উল্লাসে মাতেন দর্শকরা। এমনকি কেউ কেউ স্মারক হিসেবে তুলে নেন স্টাম্পও!  

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার। মাত্র ২৮ রানেই হারিয়ে ফেলে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। নতুন বলে বিধ্বংসী বোলিং করেন কুইন্সল্যান্ডের মার্ক স্টেকেটি ও মাইকেল নেসার। তবে চতুর্থ উইকেটে কেরি ও সাংঘার অবিশ্বাস্য জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা। দুজন মিলে ২০২ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচকে নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন। ১৩২ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ১০৫ রান করেন কেরি। অন্যদিকে, ১৯২ বলে ১৬ চার ও ২ ছক্কায় ১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সাংঘা।  

কেরির বিদায়ের পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। শেষদিকে জ্যাক লেহমান ও লিয়াম স্কট দ্রুত ফিরে গেলে ম্যাচ জমে ওঠে। তখনও জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১০ রান। তবে বেন মানেন্তির ব্যাটে চাপ সামলে জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত সাংঘার ব্যাট থেকেই আসে জয়সূচক রান, যা রূপ নেয় বাঁধভাঙা উদযাপনে।  ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় অবশ্য হয়েছেন আরেকজন, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পেসার ব্রেন্ডন ডগেট। ১১ উইকেট নিয়ে শেফিল্ড শিল্ড ফাইনালের ইতিহাসে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

এর আগে প্রথম দিন মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া কুইন্সল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় দারুণভাবে। জ্যাক ক্লেটন ও জ্যাক ওয়াইল্ডারমাথের সেঞ্চুরিতে ৪৪৫ রানে করে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেয় তারা, কিন্তু পেরে উঠল না দলটি।

এই শিরোপার মাধ্যমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো একই মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ড ও ওয়ানডে কাপের শিরোপা জিতল। অধিনায়ক নাথান ম্যাকস্বিনি ও কোচ রায়ান হ্যারিসের নেতৃত্বে স্মরণীয় এক মৌসুম কাটাল দলটি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ