চাওয়া ছিল ২ কোটি, দর-কাষাকষিতে ২ লাখ মোহরানায় ব্যাঙের বিয়ে
Published: 30th, March 2025 GMT
বাড়ির আঙিনায় কলা গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে গেট। রং-বেরংয়ের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো বাড়ি। সঙ্গে বাজানো হচ্ছে বাদ্যযন্ত্র, বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নাচছে শিশু থেকে বৃদ্ধ, চলছে গানও। এতো হই-হুল্লোড়ের মধ্যে পৌঁছেছে বরযাত্রী। এর পর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। সেই পুরনো রেওয়াজ মেনে বর-কনে পক্ষের মধ্যে মোহরানা নিয়ে শুরু হয় দর-কাষাকষি। কনে পক্ষের মোহরারা হাঁকা শুরু ২ কোটি দিয়ে, দর-কাষাকষিতে শেষমেষ নির্ধারণ হয় ২ লাখ। এতো আয়োজন মূলত ব্যাঙের বিয়ে ঘিরে। আজ রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের বুড়িশ্বর ইউনিয়নে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। মূলত বৃষ্টির আশায় স্থানীয়রা ব্যাঙের এই বিয়ের আয়োজন করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কনের বাড়িতে ঢুকতেই কলা গাছের গেট। বং-বেরংয়ের কাগজ দিয়ে সাজানো বাড়িজুড়ে বর (পুরুষ ব্যাঙ) ও কনে (স্ত্রী ব্যাঙ) পক্ষের লোকজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বৃষ্টির গান গাইছেন। সঙ্গে নাচ তো আছেই।
গ্রামবাসীরা মনে করেন, ব্যাঙের বিয়ে দিলে সৃষ্টিকর্তা খুশি হন, তখন বৃষ্টি হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই এ বিয়ের আয়োজন।
স্থানীয় কৃষক মো.
হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেই এ বিয়ের আয়োজন করেছেন।
স্থানীয় শিক্ষক অজিত কুমার পাল বলেন, ‘এটা শুধু একটি রীতি নয়, আমাদের ঐতিহ্য। চৈত্র মাসে যখন পানির সংকট দেখা দেয়, তখন গ্রামের সবাই মিলে বৃষ্টির আশায় এই আয়োজন করে। এটি মূলত সম্মিলিত আশার প্রকাশ।’
শুধু কৃষকরাই নন, প্রশাসনের লোকজনও বৃষ্টির প্রত্যাশায় এই ব্যাঙের বিয়ে দেখতে এসেছেন।
নাসিরনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কাজী রবিউস সারোয়ার বলেন, ‘আমরা স্থানীয়দের পাশে আছি। দীর্ঘমেয়াদে পানির সংকট কাটাতে উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি জানানো হবে।’
ব্যাঙের বিয়ের এই আয়োজনে সত্যিই কি দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির? এখন সেটাই দেখার বিষয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন?
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।
ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা, চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।