সন্ধ্যায় শাহরুখ খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু এখন বলতেই হচ্ছে ‘আজকে শাহরুখের মন ভালো নেই’।

কেন, নিশ্চয় তা বুঝতে পারছেন!

ঈদের রাতে শাহরুখের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স নিজেদের ইতিহাসে অন্যতম বাজে হারের সম্মুখীন হয়েছে। প্রতিপক্ষ আবার মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, যাদের সঙ্গে বলিউড বাদশাহর বিরোধ অনেক পুরোনো। কলকাতার ৮ উইকেটে অসহায় আত্মসপর্মণ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে, যে মুম্বাইয়ে তাঁর বাস!

ঈদের রাতে শাহরুখের কলকাতা নাইট রাইডার্সকে যিনি নাকানিচুবানি খাইয়েছেন, তাঁর নাম অশ্বিনী কুমার। ২৩ বছর বয়সী এই বাঁহাতি পেসার ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট, যা আইপিএল অভিষেকে কোনো ভারতীয়র সেরা বোলিং।

ওয়াংখেড়েতে আজ জ্বলে উঠেছেন মুম্বাইয়ের অন্য বোলাররাও। তাতে কলকাতা ১৬.

২ ওভারে ১১৬ রানে গুটিয়ে গেছে, যা আইপিএলের এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত দলীয় সর্বনিম্ন। ‘মামুলি’ লক্ষ্যটা মুম্বাই ছুঁয়ে ফেলেছে ৮ উইকেট আর ৪৩ বল বাকি রেখে। বলের হিসেবে আইপিএলে  এটি মুম্বাইয়ের চতুর্থ বড় জয়।

একপেশে এ জয়ে কলকাতাকে পয়েন্ট তালিকার দশে নামিয়ে ছয়ে উঠে এসেছে হার্দিক পান্ডিয়া, রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদবদের মুম্বাই। তিন ম্যাচে এক জয়ে ২ পয়েন্ট কলকাতার। আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্রথম জয় পাওয়া মুম্বাইয়েরও পয়েন্ট ২। কিন্তু নেট রানরেটে সবার চেয়ে পিছিয়ে থাকায় তলানিতে নেমে গেছে কলকাতা।   

সংক্ষিপ্ত স্কোর

কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৬.২ ওভারে ১১৬ অলআউট

(রঘুবংশী ২৬, রমনদীপ ২২, মনীশ ১৯, রিংকু ১৭; অশ্বিনী ৪/২৪, চাহার ২/১৮, পান্ডিয়া ১/১০, স্যান্টনার ১/১৭, পুথুর ১/২১, বোল্ট ১/২৩)।

মুম্বাই ইন্ডিয়ানস: ১২.৫ ওভারে ১২১/২

(রিকেলটন ৬২*, সূর্যকুমার ২৭*, জ্যাকস ১৬, রোহিত ১৩; রাসেল ২/৩৫)।

ফল: মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অশ্বিনী কুমার।  

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ