ঈদের দিনে ঢাকার অদূরে সাভারে এক নৈশপ্রহরী হত্যার শিকার হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা তাঁকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাভার পৌর এলাকার বাঁশপট্টি মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রুবেল (৩০) বরিশাল জেলার নূর মোহাম্মদ খলিফার ছেলে। তিনি সাভার পৌর এলাকার বাঁশপট্টি মহল্লায় মনিরের মালিকাধীন বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

রুবেলের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, রুবেল রাতে ডিউটি করে বাসায় আসেন। জামাকাপড় পরিবর্তনের পর ১১টার দিকে কেউ তাঁকে ফোন করেন। এরপর ‘এক ভাই ওইখানে ডাকছে’ বলে তিনি দেখা করতে যান। পরে শুনছেন, তাঁকে গুলি করা হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার পলাশ চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১১টা ৫২ মিনিটে রুবেলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গুলি করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অটল বিহারী বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির চোখের ওপরে কপালের দিকে একটি গভীর ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে গুলি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘সাভারের জনগণ’ নামের এক ফেসবুক পেজে আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। এ কে এম আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি ভিডিওটি আপলোড করেন। ওই ভিডিওতে তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাভার থানার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তার হোসেন আগ্নেয়াস্ত্রসহ এবং নৈশপ্রহরী রুবেল রয়েছেন বলে দাবি করেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাভারের দক্ষিণ বক্তারপুর এলাকায় ৫ শতাংশের একটি জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আসাদুজ্জামানের সঙ্গে মুক্তারের বড় ভাই মনির হোসেনের দ্বন্দ্ব চলছে। অস্ত্র হাতে মুক্তারের ভিডিও ভাইরালের পেছনে জমির বিরোধ কাজ করেছে—এমন ধারণা ছিল মুক্তারের। এ নিয়ে দুই ভাই মুক্তার ও মনিরের মধ্যেও দ্বন্দ্ব শুরু হয়। রুবেল হত্যার পেছনে দ্বন্দ্বের বিষয়টি থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো.

হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র পর ব তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ