সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে কলকাতা নাইট রাইডার্সের জয়ে আরও একটি ইতিহাস রচনা করলেন সুনীল নারিন। দলের জয়ে ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে কামিন্দু মেন্ডিসকে আউট করেন ক্যারিবিয়ান এই স্পিনার। সেই উইকেটেই কলকাতার জার্সিতে পূর্ণ করলেন নিজের ২০০তম উইকেট।
পুরুষদের স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনো একক দলের হয়ে ২০০ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে মাত্র দুজনের। এই তালিকার শীর্ষে আছেন ইংলিশ অল-রাউন্ডার সামিত প্যাটেল, যিনি নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে শিকার করেছেন ২০৮টি উইকেট। দ্বিতীয়জন হলেন নারিন, যিনি কলকাতার হয়ে গড়লেন এই দুর্লভ অর্জন।
এই তালিকায় নারিনের পেছনে আছেন আরও তিন বোলার। হ্যাম্পশায়ারের হয়ে ১৯৯ উইকেট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছেন ইংলিশ পেসার ক্রিস উড। চারে রয়েছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ১৯৫ উইকেট নেওয়া লাসিথ মালিঙ্গা। আর পাঁচ নম্বরে গ্লস্টারশায়ারের হয়ে ১৯৩ উইকেট নেওয়া ডেভিড পেইন।
নারিনের কলকাতার হয়ে ২০০ উইকেটের মধ্যে ১৮২টি এসেছে আইপিএলে, বাকি ১৮টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে। ২০১২ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল যাত্রা শুরু করা নারিন এখনও পর্যন্ত একমাত্র এই দলের হয়েই খেলেছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।