রাজধানীর রামপুরায় এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেপ্তার তিন জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন—সোয়েব রহমান জিসান, মো.

রাইসুল ইসলাম ও মো. কাউসার হোসেন।

রামপুরা থানার আদালতের (নারী-শিশু) প্রসিকিউশন বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, রামপুরা থানা পুলিশ শুক্রবার তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। 

গত বুধবার রাতে রামপুরা এলাকায় নারী সাংবাদিককে হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়৷ বিষয়টি নজরে আসার পর র‍্যাব-৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিক বাদী হয়ে রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। আসামিদের ধরতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৩ এর একাধিক দল মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে। পরে গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার প্রধান আসামি সোয়েব রহমান জিসানকে রামপুরা থানাধীন মেরাদিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রমনা থানাধীন বেইলি রোড এলাকা থেকে মো. রাইসুল ইসলাম ও গেন্ডারিয়া এলাকা থেকে মো. কাউসার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। 

ওই নারী সাংবাদিক বুধবার তার ফেসবুকে ‘নিজের বাসার সামনে নিরাপদ না’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, কিছু ছেলে তাকে টিজ করায় তার ভাই প্রতিবাদ করেন। বখাটেরা তখন তর্ক জুড়ে দেয় এবং তার ভাইকে মারধর করে। এরপর ওই নারী সাংবাদিক ভাইকে রক্ষা করতে গেলে বখাটেরা তাকেও হেনস্তা করে।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে নারী অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে জুতাপেটা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে মধুপুরের আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল জব্বার। গতকাল দুপুরে হঠাৎ করেই কয়েকজন নারী অভিভাবক তাঁর কক্ষে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা করেন। এ সময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন তাদের হাত থেকে শিক্ষককে রক্ষার চেষ্টা করেন। এতে তাদের ওপরও ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

হামলায় অংশ নেওয়া জাহিন ওরফে জাহি ও ঝুমা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। একই অভিযোগ করেন সুমি বেগম নামে আরেকজন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমি বিষয়টি সকালেই জানতে পেরে স্যারকে জানিয়েছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে হামলা করেন। এক পর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাঁকে হামলাকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করি।’

মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। তাকে বিভিন্ন সময়ে বোঝানো হয়েছে। কথা না শোনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করি। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, বিষয়টি জেনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ