নারী সাংবাদিককে হেনস্তা: তিন জন কারাগারে
Published: 4th, April 2025 GMT
রাজধানীর রামপুরায় এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেপ্তার তিন জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন—সোয়েব রহমান জিসান, মো.
রামপুরা থানার আদালতের (নারী-শিশু) প্রসিকিউশন বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, রামপুরা থানা পুলিশ শুক্রবার তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
গত বুধবার রাতে রামপুরা এলাকায় নারী সাংবাদিককে হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়৷ বিষয়টি নজরে আসার পর র্যাব-৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিক বাদী হয়ে রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। আসামিদের ধরতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর একাধিক দল মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে। পরে গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার প্রধান আসামি সোয়েব রহমান জিসানকে রামপুরা থানাধীন মেরাদিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রমনা থানাধীন বেইলি রোড এলাকা থেকে মো. রাইসুল ইসলাম ও গেন্ডারিয়া এলাকা থেকে মো. কাউসার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই নারী সাংবাদিক বুধবার তার ফেসবুকে ‘নিজের বাসার সামনে নিরাপদ না’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, কিছু ছেলে তাকে টিজ করায় তার ভাই প্রতিবাদ করেন। বখাটেরা তখন তর্ক জুড়ে দেয় এবং তার ভাইকে মারধর করে। এরপর ওই নারী সাংবাদিক ভাইকে রক্ষা করতে গেলে বখাটেরা তাকেও হেনস্তা করে।
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ