সমস্যা সমাধানে সম্পৃক্ত হবেন ড. ইউনূস
Published: 5th, April 2025 GMT
বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বড় অঙ্কের সম্পূরক শুল্ক আরোপের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই সম্পৃক্ত হবেন। এই সমস্যা সমাধানের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে এসেছেন। বর্তমানেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে বাংলাদেশ সরকারের। এখন প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি যুক্ত হবেন।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এই শুল্ক আরোপ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে চারজন উপদেষ্টা, বিশেষজ্ঞ ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠক থেকেই এমন সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে আসেন বাণিজ্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড.
খলিলুর রহমান বলেন, ‘এই শুল্ক আরোপের বিষয়টি আকস্মিক কোনো বিষয় নয়। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমি যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলাম। তখন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও শুল্ক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে এসেছি। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই মুহূর্তেও আমরা নিবিড় আলোচনাতে আছি। সব কিছু কূটনীতি দিয়ে সমাধান হয় না। আমরা আগেই সব কিছু জনাতেও চাই না।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য বিভিন্ন দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ বাড়িয়েছে। তাদের বাণিজ্য ঘাটতির কথা চিন্তা করে তারা এটা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে সংযুক্ত হবেন। আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে সংযুক্ত আছি। এখানে সম্ভাবনা দেখছি। তাদের দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনারও চেষ্টা করা হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা জ্বালানি, ক্র্যাপ্স, তুলার মতো আরও যেসব পণ্য আমদানি করা বা আমাদের আমদানির প্রয়োজন হয়, সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করা হবে। এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। পাশাপাশি ড. খলিলুর রহমানও যুক্ত থাকবেন। আমাদেরও লক্ষ্য থাকবে প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর। এতে করে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। ব্যবসায়ীরাও ব্যক্তিগতভাবে উৎসাহী হবেন যদি তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে, তাহলে আমরাও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের পণ্যের ওপর শুল্ক কম থাকলেও আমাদের পণ্য তাদের থেকে বেশি উপযুক্ত। আমরা এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা যেসব প্রস্তাব করেছেন, সেগুলো আমরা কনসাইজ করে উপস্থাপন করব।
ইতোমধ্যে ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ শুল্ক কমানোর বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে। বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো আবেদন করবে কিনা জানতে চাইলে বশির উদ্দিন বলেন, আগামী ৯ তারিখ থেকে শুল্ক কার্যকর হবার কথা। কাজেই আবেদন করার সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে যারা ছিলেন
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন আহমেদ, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিশেষজ্ঞরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প শ ল ক আর প ক ত হব ন সরক র র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।