আফগানিস্তানে নারীদের চুল বিক্রি কেন নিষিদ্ধ করেছে তালেবান
Published: 7th, April 2025 GMT
আফগানিস্তানে তালেবান কর্তৃপক্ষ ক্ষমতা গ্রহণের আগপর্যন্ত ফাতিমার মতো নারীরা তাঁদের চুল বিক্রি করতে পারতেন। এ থেকে তাঁদের হাতে কিছু টাকা আসত। আফগান নারীদের বিক্রি করা চুল দিয়ে তৈরি হয় পরচুলার মতো নানা ফ্যাশন উপাদান।
গত বছর তালেবান সরকার চুল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ কারণে ২৮ বছর বয়সী ফাতিমার মতো নারীদের গোপনে চুল বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে তাঁদের এ কাজে অনেক ঝুঁকি রয়েছে। একবার ধরা পড়ে গেলে তালেবান সদস্যদের হাতে তাঁদের শাস্তি পেতে হবে।
আফগান নারীরা সাধারণত গোসলের পর ঝরে পড়া চুল ও সেলুনের মেঝেতে পড়া চুলগুলো গুছিয়ে বিক্রি করেন। এ চুলের দাম খুব সামান্য।
আফগানিস্তানে ২০২১ সালে তালেবান নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর কাবুলে বেতনভুক্ত বেসরকারি চাকরিতে থাকা কয়েকজন নারীর মধ্যে একজন হচ্ছেন ফাতিমা। মাসে তিনি ১০ হাজার টাকার মতো বেতন পান (১০০ মার্কিন ডলার)। ফাতিমা চুল বিক্রির বিষয়ে বলেন, ‘আমার এ অর্থ প্রয়োজন। এ থেকে আমি নিজের জন্য বা বাড়ির জন্য কিছু কিনতে পারি।’
ফাতিমা অবশ্য নিরাপত্তার খাতিরে তাঁর পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না। তিনি বলেন, ১০০ গ্রাম চুল বিক্রি করলে ৩ ডলারের কিছু বেশি অর্থ পাওয়া যায়। মাসে তিনি যে বেতন পান, তাতে সামান্য কয়টা টাকা এতে যুক্ত হয়।
আফগান এই নারী বলেন, যেসব ক্রেতা পরচুলা তৈরির জন্য চুল বিদেশে রপ্তানি করতে চান, তাঁরা চুল সংগ্রহের জন্য আমাদের দরজায় কড়া নাড়েন।
তালেবান সরকার গত বছর চুলসহ ‘মানব শরীরের যেকোনো অঙ্গ’ বিক্রি নিষিদ্ধ করে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?