বিনিয়োগ সম্মেলনে রোবট প্রযুক্তির প্রদর্শন, কাজ করতে পারে পানির নিচেও
Published: 8th, April 2025 GMT
কেউ এসেছেন পানির নিচে কর্মক্ষম রোবট নিয়ে, কেউ এসেছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে; কেউ আবার এসেছেন লবণাক্ত জলাধারে ফসল চাষের প্রযুক্তি নিয়ে।
এ ধরনের নানা উদ্ভাবনী ও নতুন উদ্যোগ নিয়ে সারা দেশের প্রায় দেড় হাজার তরুণ-তরুণী সোমবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জড়ো হয়েছিলেন। তাঁরা সবাই এসেছেন বিনিয়োগ সম্মেলনে। আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
চার দিনের এ বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিন গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘স্টার্টআপ কানেক্ট’ পর্ব। এটি মূলত স্টার্টআপ খাতের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে নেটওয়ার্কিং এবং সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা।
বিনিয়োগ সম্মেলনে চারটি হলে বিভিন্ন বিষয়ে অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি বেশ কিছু উদ্যোক্তা মূল ভেন্যুর বাইরে তাঁদের পণ্য ও সেবার প্রদর্শনী করছেন। এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান ডুবটেক। প্রতিষ্ঠানটি আন্ডার ওয়াটার বা পানির নিচের রোবট প্রযুক্তি সেবা দেয়। যেমন বন্দরে কোনো জাহাজ এলে সেটির ইন্সপেকশন বা পরিদর্শন করে তাদের তৈরি বিশেষ রোবট। আবার আরেক ধরনের রোবট আছে তাদের, যেটি অ্যাকুয়াকালচার বা পানির নিচে মাছসহ বিভিন্ন জলজ চাষের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা সৌমিক হাসান জানান, তাঁরা দেশে বাণিজ্যিকভাবে এক বছর ধরে কাজ করছেন। এ সম্মেলনে পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন তাঁরা।
ইকোসেন্টিল নামের আরেকটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান তাদের আইডিয়া বা চিন্তা তুলে ধরে সম্মেলনের একটি অধিবেশনে। তারা জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তীব্র লবণাক্ততার কারণে জলাধারে মাছ বা অন্য ফসল চাষ করা লাভজনক হয় না। সে জন্য তারা পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি হেলোফাইডস (হেলেঞ্চা ধরনের) গাছ রোপণের মাধ্যমে জলাধারের লবণাক্ততা কমিয়ে চাষোপযোগী করার পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এখন তারা এই উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে চায়।
এ ধরনের নানা উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়েই পুরো আয়োজন ছিল লোকে লোকারণ্য। দিনব্যাপী স্টার্টআপ কানেক্ট অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি তরুণ ও উদ্ভাবনী উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম দিনের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজকেরা। সংবাদ সম্মেলনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
আশিক চৌধুরী বলেন, স্টার্টআপ কানেক্টে শুধু ঢাকা থেকে নয়, সারা দেশ থেকেই তরুণ উদ্যোক্তারা এসেছেন। বিষয়টি খুবই আশাব্যঞ্জক। সারা দেশ থেকে মোট দেড় হাজারের বেশি উদ্যোক্তা এসেছেন। পাশাপাশি ২৫টির বেশি বৈশ্বিক ও স্থানীয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
দেশে বিনিয়োগপ্রবাহের বাধা দূর করতে কাজ করছেন বলে জানান আশিক চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশে সমন্বিতভাবে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দূর করা হবে। দেশের স্টার্টআপ খাত অনেক দিন ধরে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আসছে, সেগুলো দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আশিক চৌধুরী বলেন, স্টার্টআপ খাতের মানুষের বড় দাবি ছিল শেয়ার সোয়াপিং। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বাধা সরিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ স্থানীয় স্টার্টআপ দেশের বাইরের কোনো স্টার্টাআপের সঙ্গে শেয়ার বদল (সোয়াপিং) করতে পারবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ট র টআপ এস ছ ন ধরন র করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিমন্সের চোখে মিরাজের অসুস্থতা ‘মধুর সমস্যা’
গলের মেঘলা আকাশ আর টানা বৃষ্টির মাঝে বাংলাদেশ টেস্ট দলের প্রস্তুতি শুরু হলো রোববার। শুরুর দিনেই একটি দুশ্চিন্তা—অসুস্থতার কারণে অনুশীলনে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের চোখে এটি আবার ‘মধুর সমস্যা’।
বাংলাদেশ কোচের মতে, মিরাজের সমস্যা সুযোগ করে দেবে অন্য কারও। তবে মিরাজও যে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সেটিও জানিয়েছেন সিমন্স। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন মিরাজের সর্বশেষ অবস্থা, ‘গত দুই দিনে সে অনেকটাই ভালো আছে। আমরা দেখব সন্ধ্যায় ওষুধের পর সে কেমন থাকে। আশা করি, কাল অনুশীলন করতে পারবে এবং খেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’
সিমন্স যোগ করেছেন, ‘এটা (মিরাজের অসুস্থতা) নিশ্চয়ই চিন্তার। তবে একজনের সমস্যা অন্যজনের জন্য সুযোগ এনে দেয়। দলের সবাই চায় মিরাজ সুস্থ হয়ে উঠুক, কিন্তু তারা এ–ও জানে, যদি মিরাজ না-ও খেলতে পারে, তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটা সমস্যা, তবে সমস্যাটা মধুর।’
মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবেমেহেদী হাসান মিরাজএদিন অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও কথা বলেন সিমন্স। ২০১৩ সালে গলে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকের কাছে বড় কিছু প্রত্যাশা করছেন না কোচ। তাহলে কী চাওয়া সিমন্সের? বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘আমি চাই সে যেন খেলাটা উপভোগ করে। ওই ইনিংস যেমন সে আনন্দ নিয়ে খেলেছিল, এবারও যেন সেটাই করে, তা-ই চাই। মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবে।’
সম্প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কত্বে হঠাৎ পরিবর্তন এনে নাজমুল হোসেনের বদলে মিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। সিমন্স মনে করেন, টেস্টে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নাজমুলের ওপর পড়বে না, ‘আমি একেবারেই মনে করি না যে এটি ওকে প্রভাবিত করবে। মাঠে নামলে নাজমুল শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, বাইরের বিষয় আমরা দেখি। তাই এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।’
বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স