স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেছেন, অর্থ সংকটে সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকে উক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আগামী জুনে সরকারি অর্থায়নে এ ওষুধ কেনা হবে। সারা বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে ওষুধ পেতে টেকসই অর্থায়ন প্রয়োজন।

আজ বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক ওয়েবিনার এসব কথা বলেন তিনি। অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ডা.

মুহাম্মদ হাবিবুর বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবামূলক কার্যক্রম চলে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসপি) মাধ্যমে। এর চতুর্থ কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর জুনে। পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচি ১০ মাসেও অনুমোদন হয়নি। ফলে উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের পাশাপাশি কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ এই মুহূর্তে ঘাটতি আছে। প্রাইমারি হেলথ কেয়ার উইংকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং এর মাধ্যমে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। 

ওয়েবিনারে জানানো হয়, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে বিনামূল্যে এ রোগের ওষুধ প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিশ্চিত করা জরুরি এবং এজন্য টেকসই অর্থায়ন প্রয়োজন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ যেন না বাড়ে সেজন্য খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচরণে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি বাজেট বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে অঞ্চল, বয়স, শিক্ষা এবং লিঙ্গভেদে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপের পার্থক্য আছে। গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিকার এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। 

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক জনাব এবিএম জুবায়ের। সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ ওয়েবিনারে অংশ নেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল স ব স থ য কমপ ল ক স কমপ ল ক স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের পর ঢিলেঢালা বাজার, পণ্যের দামও কমেছে

কোরবানি ঈদের চার দিন পরেও নিত্যপণ্যের বাজারে বেশ ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি যেমন কম, অন্যদিকে অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ঈদের আগমুহূর্তে মুরগি, শসাসহ কিছু পণ্যের যে দাম বেড়েছিল, সেটিও কমেছে। 

গত শনিবার ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি রয়েছে, যা শেষ হবে ১৪ জুন শনিবার। লম্বা এই ছুটিতে যাঁরা রাজধানীর বাইরে গেছেন, তাঁদের অনেকে এখনো ঢাকায় ফেরেননি। সবজি, মাছ ইত্যাদি ছাড়া অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ–শৃঙ্খলও সেভাবে সচল হয়নি।

বিক্রেতারা জানান, ক্রেতা কম থাকায় গত কয়েক দিনেই খুবই ঢিলেঢালাভাবে বিক্রি হয়েছে। তবে আজ শুক্রবার থেকে বেচাকেনা ভালোভাবে শুরু হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কোরবানির ঈদের আগে হঠাৎ বাজারে শসা, কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। মূলত ওই সময় এসব পণ্যের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছিল। তবে ঈদের পরে সেই দাম কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে শসার কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কোথাও এর চেয়ে বেশি দামেও শসা বিক্রি হয়েছিল। বাজারে গতকাল প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়, যা ঈদের আগে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা ছিল। সালাদ পণ্যের মধ্যে টমেটোর দাম এখনো বেশি রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়, যা ঈদের আগেও একই ছিল।

বাজারে অন্যান্য সবজির দামও স্থিতিশীল রয়েছে। অধিকাংশ সবজিই ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যেমন লাউ, পেঁপে, পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল প্রভৃতি সবজি ৪০-৫০ টাকায় এবং বরবটি, ঢ্যাঁড়স, কাঁকরোল, করলা, বেগুন প্রভৃতি সবজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০-২২ টাকা ও পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কোরবানি ঈদের পরপর বাজারে গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম। এ কারণে মাংসের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও কম দেখা গেছে। ঈদের আগে মুরগির দাম বেড়েছিল, সেটি কমেছে। তবে গরু ও খাসির দাম আগের মতোই রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে এই দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি ছিল। আর ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের মতোই ডজন ১৩০ টাকা রয়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গরুর মাংস বিক্রেতা মো. রানা বলেন, বর্তমানে সাধারণ গ্রাহক খুব কম। তবে ঈদ–পরবর্তী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য মাংস বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারেও কমসংখ্যক ক্রেতা দেখা গেছে। অধিকাংশ মাছের দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি চাষের রুই ৩২০-৩৮০
টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা, পাঙাশ ২০০-২৩০ টাকা, কই ২৩০-২৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আকারভেদে ইলিশের দামও কেজিতে ১০০-৩০০ টাকার মতো কমেছে।

অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে চাল, ডাল, তেল প্রভৃতি আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। বর্তমানে বাজারে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগরসহ অধিকাংশ মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৭২-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম রাখা হচ্ছে ১৮৯ টাকা। 

রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাব্বির আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষে গতকাল সকালেই ঢাকায় ফিরেছি। বাসায় মাছ, মাংস আছে; শুধু সবজি কিনতে বাজারে এসেছি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
  • ঈদের পর ঢিলেঢালা বাজার, পণ্যের দামও কমেছে