রূপগঞ্জে শ্রমিক অসন্তোষ, সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ
Published: 10th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বুধবার রবিনটেক্স নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা টানা ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ আহত হন শতাধিক শ্রমিক।
জানা গেছে, বিনা কারণে শ্রমিক ছাঁটাই, ইফতার বিল, বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল দিনব্যাপী আউখাবো এলাকার রবিনটেক্স পোশাক কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর ফলে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদুল ফিতরের ছুটির একদিন আগে বিনা নোটিশে ৬৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। এ ছাড়া মালিক পক্ষ শ্রমিকদের ৬৫% বোনাসের স্থলে ৫০% এবং এক মাসের বেতনের জায়গায় ২০ দিনের বেতন দিয়েই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
গত মঙ্গলবার কারখানা খুললে শ্রমিকরা এসব বিষয়ে অভিযোগ করেন। গতকাল সকালে শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন শিল্প পুলিশ, রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। তারা কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে শ্রমিকরা তাদের লক্ষ্য করে পানির বোতল ছোড়ে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেন।
এর পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে অবরোধ করেন শ্রমিকরা। তাদের সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মুবীন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব, মেহেদীসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও লাঠিচার্জে শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন রূপগঞ্জের ইউএনও সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য ণগঞ জ র পগঞ জ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বাম দলগুলোর প্রতিক্রিয়া: ‘তফসিল হয়েছে, তবে সামনে বড় চ্যালেঞ্জ’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশের বাম দলগুলো।
তারা দাবি করছেন, তারিখ ঘোষণার পরও মাঠে এখনো কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি,বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জনমনে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বিত ও দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন জরুরি।
আরো পড়ুন:
অসত্য তথ্য ছড়ানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ: সিইসি
তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “১৭ বছর পর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পারে এই তফসিল। জনগণও নিজেদের দল ও প্রতীকে ভোট দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। ১২ ফেব্রুয়ারি সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি মনে করেন, “একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে নতুন অভিযাত্রার ইঙ্গিত হলেও সামনে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে।”
“একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন, তা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের আস্থা ফেরানো জরুরি। ভোটে টাকার খেলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে”, বলেন সাইফুল হক।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স তফসিল ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এখন থেকে প্রতিটি মুহূর্তে ইসি ও সরকারকে এমন সব পদক্ষেপ নিতে হবে, যা দেখলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে, এবার সত্যিকার অর্থে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।”
তিনি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “প্রার্থী হওয়া ও ভোট দেওয়ার সমান সুযোগ সবার জন্য নিশ্চিত করতে ইসিকে আরো সক্রিয় হতে হবে। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদকে পুনর্গঠন করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতার বার্তা আরো দৃশ্যমান করতে হবে।”
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, “বহুল প্রত্যাশিত তফসিল ঘোষণায় স্বস্তি এসেছে, তবে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ এখনো মসৃণ নয়।”
“নির্বাচনকে টাকার প্রভাব, পেশিশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা এবং প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত করতে হবে। সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলার অবনতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে”, যোগ করেন তিনি।
সরকার, ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা এবং জরুরি উদ্যোগ ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন বজলুর রশীদ ফিরোজ।
ঢাকা/এএএম/রাসেল