প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ২৫ কোটি টাকা তছরুপ করেছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কাট্টলি টেক্সটাইল। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে এই তছরুপের ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। এ কারণে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে আইপিওর অর্থ তছরুপের বিষয়টি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএসইসির গতকাল বুধবারের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিএসইসি জানিয়েছে, কাট্টলি টেক্সটাইল আইপিওর ২৫ কোটি ৪ লাখ টাকা তছরুপের বিষয়টি দুদকে প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে কমিশন সভায়।

বস্ত্র খাতের কোম্পানি কাট্টলি টেক্সটাইল ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছর আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা এই অর্থ কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংকঋণ পরিশোধ, কর্মীদের আবাসনসুবিধাসহ নানা খাতে ব্যয় করার কথা ছিল। কিন্তু আইপিওর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কয়েক বছর পরও সেই অর্থ যথাযথ খাতে ব্যবহার করেনি বলে বিএসইসির এক তদন্তে উঠে আসে। এমনকি আইপিওর অর্থের বড় অংশই তছরুপ হয় বলে তদন্তে জানা যায়। তারই ভিত্তিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএসইসি বিষয়টি দুদকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শুধু অর্থ তছরুপের ঘটনাই নয়, কাট্টলি টেক্সটাইল তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) তালিকাভুক্তি মাশুল বা ফিও পরিশোধ করেনি। এ কারণে এক মাসের মধ্যে এই বকেয়া মাশুল ডিএসইকে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। যদি এক মাসের মধ্যে কোম্পানিটি ডিএসইকে তালিকাভুক্তি মাশুল পরিশোধ না করে, তাহলে কোম্পানিটির প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র পরিচালক বাদে) ২ লাখ টাকা করে জরিমানা গুনতে হবে।

কাট্টলি টেক্সটাইল আইপিওতে ৩ কোটি ৪০ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে বিক্রি করা হয়। তালিকাভুক্তির পর কয়েক বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিয়েছিল। এরপর ২০২২ ও ২০২৩ সালে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এ কারণে কোম্পানিটির শ্রেণি মানেরও অবনমন ঘটে। বর্তমানে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ‘বি’ শ্রেণির কোম্পানি।

আইপিওতে আসার আগে ভালো মুনাফা দেখানো কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর কয়েক বছর না যেতেই লোকসানি কোম্পানিতে পরিণত হয়। সর্বশেষ গত বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৮৪ পয়সা লোকসান করেছে। ওই বছর শেষে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। লোকসান সত্ত্বেও গত বছর শেষে শ্রেণিমান ধরে রাখতে গত অর্থবছরের জন্য সাধারণ শেয়ারধারীদের নামমাত্র নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

এদিকে কাট্টলি টেক্সটাইলের আইপিও তছরুপের ঘটনা দুদকে হস্তান্তরের খবরেও আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টায় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪০ পয়সা বা সোয়া ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৭০ পয়সায়। ১১৬ কোটি টাকার মূলধনের এই কোম্পানির শেয়ারের ৭০ শতাংশই রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। ফলে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

কাট্টলি টেক্সটাইলকে শেয়ারবাজারে আনার অনুমতি দিয়েছিল বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। খায়রুল কমিশনের বিরুদ্ধে আইপিও অনিয়মেরই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল। তার সময়ে শেয়ারবাজারে আসা বেশির ভাগ কোম্পানি কয়েক বছর না যেতেই দুর্বল ও বন্ধ কোম্পানিতে পরিণত হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ব এসইস র ত র পর পর শ ধ তদন ত আইপ ও

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ