একেই মনে হয় বলা হয় শাপে বর। চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) আইপিএলে ৫ ম্যাচের মধ্যে চারটিতে হেরেছে। ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছিল দলটার অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড় চোট। এই ২৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার চলমান মৌসুম আর খেলতে পারবেন না। তবে এরপর যা হলো, তাতে স্বস্তি বইছে হলুদ শিবিরে। ঋতুরাজের পরিবর্তে সিএসকের অধিনায়কের ভূমিকায় ফিরলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়ের নিয়মিত অধিনায়ক ঋতুরাজ বৃহস্পতিবার কনুইয়ের চোটের কারণে চলতি আইপিএল মৌসুম থেকে ছিটকে যান। এই পরিস্থিতিতে ফ্র্যাঞ্জাইজিটির ম্যানেজম্যান্ট দলের নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য রাজি করিয়েছেন ধোনিকে। যার হাত ধরেই পাঁচটি শিরোপা জয় করিয়েছেন সিএসকে।
চেন্নাই সামাজিক মাধ্যমে ঋতুরাজের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে তিনি আইপিএলের বাকি অংশে না খেলতে পারার হতাশা প্রকাশ করেন। ঋতুরাজের বিশ্বাস ধোনির অধিনায়কত্বে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে, “দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, চোটের কারণে আমি আইপিএলের পরবর্তী ম্যাচগুলোতে থাকতে পারছি না। তবে আপনাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। হ্যাঁ, আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছি। কিন্তু আশা করি ধোনি ভাইয়ের নেতৃত্বে সবকিছু বদলাবে। আমি ডাগআউটে থেকে দলের পাশে থাকব এবং উৎসাহ দেব।”
আরো পড়ুন:
চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি করলেন নিলামে আলোড়ন তোলা প্রিয়াংশ
হারের হ্যাটট্রিক গড়ল চেন্নাই
“দলকে কঠিন পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে পারলে আমি অবশ্যই খুশি হতাম, তবে কিছু বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তাই এখন যা আছে সেটাকে মেনে নিয়ে, দলকে সমর্থন করব এবং আশা করি আমরা দারুণ একটি মৌসুম কাটাব।”- যোগ করেন ঋতুরাজ।
সাম্প্রতিক সময়ে চেন্নাই তাদের ঘরের মাঠ চিপকে তেমন সুবিধা পাচ্ছে না। যা অতীতে তাদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে দল ভালো ব্যাট করলেও ১৮ রানে হেরে যায়। এইসব ব্যর্থতায় দলটির কোচ স্টিফেন ফ্লেমিংও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারের পর।
সিএসকে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে। যেখানে হারলে দল আরও বড় সমস্যায় পড়তে পারে। তবে ধোনির কাপ্তান হিসেবে ফিরে আসা দলকে প্রেরণা দিবে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।