ঘোষণাপত্রে ইসরায়েলের বিচার দাবি ও সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান
Published: 12th, April 2025 GMT
গাজায় গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিচার, ইসরায়েলের সঙ্গে সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান এসেছে গণজমায়েত থেকে। ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষ এই জমায়েতে অংশ নেন।
গণজমায়েত থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রে এ আহ্বান জানানো হয়। দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সবার পক্ষ থেকে এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
এর আগে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও গাজায় গণহত্যার ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে বেলা সোয়া তিনটার দিকে শুরু হয় গণজমায়েত।
লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত গণজমায়েতের শেষ দিকে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আদালতে জায়নবাদী ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যুদ্ধবিরতি নয়, অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘসহ মুসলিম বিশ্বকে দায়িত্ব নিতে হবে। ১৯৬৭ সালের আগে ফিলিস্তিনিদের যে ভূমি ছিল, সেগুলো ফিলিস্তিনিদের ফিরিয়ে দিতে দখলদার ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে।
ঘোষণাপত্রে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার পথ উন্মুক্ত করা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে ওআইসিসহ মুসলিম বিশ্বের সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে ইসরায়েলের ওপর বাণিজ্যিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে খাদ্য, চিকিৎসা ও প্রতিরক্ষা সহায়তা নিয়ে মজলুম গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের পাসপোর্টে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্তটি ফিরিয়ে আনা, ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র গণজম য় ত গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।