অনুমতি বাতিল হলেও বৈশাখী মেলা করার ঘোষণা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের
Published: 12th, April 2025 GMT
ঢাকার কেরানীগঞ্জের অধ্যাপক হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে বৈশাখী মেলার অনুমতি বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, ‘মাঠে মেলার বিষয়ে ইউএনও কী বুঝে অনুমতি দিয়েছেন, কী বুঝে বাতিল করেছেন, সেটি তাঁর ব্যাপার। কাফনের কাপড় পড়ে হলেও এখানে আমরা মেলা করব।’
আজ শনিবার সকালে ভিটি মাঠ নামে পরিচিত ওই স্টেডিয়ামে প্রশাসনের অভিযানের পর এ কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে আগামীকাল সোমবার স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ওই স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মো.
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বলেন, যখন তাঁরা জানতে পারেন মেলাটি একটি স্টেডিয়ামে করা হবে, তখন তাঁরা অনুমতি বাতিল করে দেন। এরপরও মেলার প্রস্তুতির কাজ শুরু হলে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে আজ সকালে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা মেলার প্রস্তুতির কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন যৌথ বাহিনীর সহায়তায় সেখানে অভিযান চালায়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন ও কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে মেলার আয়োজনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈশাখী মেলা বাঙালির সংস্কৃতির অংশ। এখানে আগে মেলা হতো। ওই মেলায় সব শ্রেণি–পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতেন। ১৭ বছর আমরা মেলা করতে পারিনি। এটাকে আমরা নতুন করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কেরানীগঞ্জ শাখার সমন্বয়ক কাওসার আহমেদ বলেন, ‘কাফনের কাপড় পরে হলেও মেলা করব’—এ ধরনের বক্তব্য কেবল জন–আতঙ্ক বাড়ায় না, বরং রাজনৈতিক নেতাদের গণবিচ্ছিন্ন অবস্থাকেও প্রকাশ করে।
মেলা আয়োজনের আবেদনকারী তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মো. সামিউল্লাহ বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন মাঠে মেলার প্রস্তুতি কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পরে মেলার অনুমোদন চেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে। এখনো অনুমতি পাননি। তাঁরা আশা করছি মেলার অনুমতি পাবেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ব এনপ র স ম ল র অন ম র সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে