আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা ৭ হাজার ১৮৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে আইন মন্ত্রণালয় সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। আজ রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। 

আইন উপদেষ্টা বলেন, একটা মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে অনেক কাগজপত্র প্রত্যাহার করতে হয়। অনেক সময় এমন মামলা আছে, যেগুলো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক নয়। অনেকে অনেকভাবে নাম ঢুকিয়ে দেয়। এ বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা লুট করা হয়েছে, তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে আমি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এতে গভর্নরসহ অনেকেই রয়েছেন। ব্যাংক থেকে ২ বিলিয়ন ডলার লুট করার পরিকল্পনা ছিল হ্যাকারদের। ঘটনাটি ঘটলে দুর্ভিক্ষে পড়ত বাংলাদেশ।’

এ বিষয়ে সিআইডির তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাদের কমিটি থেকে বাদ দিতে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এ ঘটনায় সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার এ বিষয়ে তদন্তে গড়িমসি করেছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সুইফট পেমেন্ট পদ্ধতিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এই বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। পরে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়। কিন্তু এখনও ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আইন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ