মায়ের গর্ভে বেড়ে উঠতে উঠতেই শিশু তাঁর মায়ের কণ্ঠস্বর শুনতে পায়। জন্মের সময়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সে মায়ের কণ্ঠস্বরটিকে চিনতেও পারে। পৃথিবীর বুকে তার সবচেয়ে আপন তো এই মানুষটাই। তবে এই মানুষটার কণ্ঠস্বর সত্যিই চাপ সামলাতে সহায়ক কি না, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণা জানাচ্ছে চমকপ্রদ তথ্য।

যা হয়েছিল সেই গবেষণায়

৭ থেকে ১২ বছর বয়সী ৬১ জন মেয়েকে নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। এই মেয়েদের সবাইকেই বেশ চাপের পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছিল। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে কোনো বিষয়ে বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছিল তাদের। আরও ছিল কঠিন অঙ্কের হিসাব কষার কাজ। এসব কাজ তাদের করতে হয়েছিল অচেনা মানুষদের সামনে। এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে পড়ার পর মেয়েদেরকে তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছিল। একটি দলের মেয়েদেরকে তাদের মায়েদের স্পর্শ পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অন্য একটি দলের মেয়েরা তাদের মায়েদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল। বাকি দলটির মেয়েরা সাদামাটা একটি চলচ্চিত্র দেখে মনের চাপ কমানোর সুযোগ পেয়েছিল। তারপর তিনটি দলের মেয়েদের লালা এবং প্রস্রাবের হরমোন পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল, কাদের মানসিক চাপ সত্যিই কমেছিল।

আরও পড়ুনমায়ের শেষ সম্বল ৫০ হাজার টাকায় ছেলের উদ্যোগ২৭ অক্টোবর ২০২৪গবেষণার ফলাফল

যারা মায়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিল এবং যারা মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল, তাদের হরমোনের পরিবর্তন ছিল ইতিবাচক। আবেগ ও ভালো লাগার অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোন অক্সিটোসিন বেড়েছিল এই দুই দলের মেয়েদেরই। চাপের হরমোন কর্টিসলের মাত্রা কমে গিয়েছিল। মা যখন সন্তানকে জড়িয়ে ধরেন কিংবা কাঁধে হাত রেখে ভরসা দেন, তখন হরমোনের এ ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ এ গবেষণার ফলাফল বলছে, মায়ের কণ্ঠস্বর মাকে জড়িয়ে ধরার মতোই প্রশান্তি দিতে পারে সন্তানকে। যে দলটিকে চলচ্চিত্র দেখতে দেওয়া হয়েছিল, তাদের হরমোনের এমন ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়নি।

শেষ কথা

পড়ালেখা বা কাজের সূত্রে মায়ের থেকে দূরে থাকেন অনেকেই। বিয়ের পর অনেককে মায়ের কাছ থেকে দূরে চলে যেতে হয়। কারণ যেটিই হোক, মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকার অর্থই হলো আপনি মায়ের শরীরের চেনা গন্ধটা পাচ্ছেন না, চাইলেই মাকে জড়িয়ে ধরতে পারছেন না। তবে সব সময়ের জন্য মায়ের কাছে থাকার কিংবা মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসার সুযোগ না পেলেও আপনি মায়ের কাছে থাকার প্রশান্তির খানিকটা পেতেই পারেন। যোগাযোগপ্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে অডিও বা ভিডিও কল করা তো কোনো ব্যাপারই নয়। তাই যত দূরেই থাকুন না কেন, মাকে ফোন করুন নিয়মিত। তাতে আপনি ভালো থাকবেন, ভালো থাকবেন আপনার মা।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

আরও পড়ুনসাভারে মায়ের নামে বানানো মসজিদ পেল টাইম–এর স্বীকৃতি ২২ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দল র ম য় র হরম ন হয় ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। 

দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।   

আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ