অপহরণের ৩ দিন পর স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
Published: 15th, April 2025 GMT
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় অপহরণের তিন দিন পর সাব্বির হোসেনের (১৬) অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম এলাকার পরিত্যক্ত টয়লেটের ভিতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অপহৃত কিশোর সাব্বির হোসেন উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সাব্বির একই ইউনিয়ন বিশুবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে সাব্বিরের দুই বন্ধু রামনাথপুর গ্রামের আব্দুল ছাত্তারের ছেলে রবিউল ইসলাম (১৮) ও বিশুবাড়ি গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে আব্দুল আলিম (১৮) বেড়ানোর কথা বলে সাব্বিরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকায় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মূল অপহরণকারী ইউনুস আলীসহ কয়েকজন তাকে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। রাত ঘনিয়ে এলেও সাব্বির বাসায় না ফেরায় তার দুই বন্ধু রবিউল ও আব্দুল আলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা টাকার বিনিময়ে সাব্বিরকে ইউনুস আলীর হাতে তুলে দেয় বলে স্বীকার করে। এ সময় সাব্বিরের পরিবারের লোকজন পুলিশকে খবর দিলে রবিউল ও আলিমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সেবায় ছাত্রদল
তিয়ানশির জালে কুমিল্লার শিক্ষার্থীরা, স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণা
নিহতের স্বজনরা জানান, গত শনিবার দুপুরে সাব্বিরের দুই বন্ধু বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার (১৫ এ্রপ্রিল) সকালে পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে সাব্বিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সাব্বিরের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে ওরা বেড়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’’
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম জানান, দুদিন আগে সাব্বির নামে এক কিশোরকে অপহরণের অভিযোগ পান। ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রবিউল ও আলিম নামের দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর কবিরুল নামের আরো একজনকে আটক করা হয়। তাদের সবার বাড়ি উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের রামনাথপুরের বিশুবাড়ি গ্রামে।
ওসি আরো বলেন, কিছুক্ষণ আগে মূল অপহরণকারী ইউনুস আলীকে (৩৫) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ইউনুস আলী পার্শ্ববর্তী শালমারা ইউনিয়নের তরফকামাল গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর ছেলে।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/মাসুম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ অপহরণ ইউন স আল মরদ হ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’