গাবতলীতে কাভার্ডভ্যান চালককে মারধরে পৌনে তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ, যানজট
Published: 17th, April 2025 GMT
রাজধানীর গাবতলীতে কাভার্ড ভ্যানের এক চালককে মারধর করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পৌনে তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন পরিবহন শ্রমিকেরা। এ সময় আশপাশের এলাকায় যানজট দেখা দেয়। পরে পুলিশের আশ্বাসে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে দেন।
কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ৯টার দিকে গাবতলী প্রধান সড়কে কাভার্ড ভ্যানের কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিতে যান। এ নিয়ে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সেখানে থাকা দুই ট্রাফিক সদস্য চালককে মারধর করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবহন শ্রমিকেরা গাবতলী প্রধান সড়ক অবরোধ করেন। তারা কর্তব্যরত ট্রাফিক সদস্যদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ট্রাফিকের একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত এ অবস্থা চলে। এ সময় ঢাকা থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। যাত্রাবাড়ী আর সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে আসা কোনো যানবাহন গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায়নি। আশপাশের সড়কেও তীব্র যানজট দেখা দেয়।
দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিব উল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গাবতলীর প্রধান সড়কে একটি কাভার্ড ভ্যানের কাগজপত্র ঠিক না থাকায় কর্তব্যরত সার্জেন্ট চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিতে উদ্যত হন। এতে চালক ক্ষুব্ধ হয়ে সার্জেন্টের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আশপাশের লোকজন এসে ওই চালককে মারধর করে।
ওসি রাকিব উল হোসেন বলেন, ট্রাফিক সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিবহন শ্রমিকেরা রাস্তা ছেড়ে দেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ
ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতি পথে যমুনা সেতু-সংলগ্ন মহাসড়কে তীব্র যানজট। তাই অনেকে পাবনার কাজীরহাট ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। কাজীরহাট-আরিচা ফেরিঘাটে ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহন পারাপার হচ্ছে। আগের ৪টি ফেরির সঙ্গে আরও ২টি যুক্ত হওয়ায় এই নৌপথে মোট ৬টি ফেরি চলাচল করছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বাস কাউন্টারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে যানজট শুরু হয়। শুক্র ও গতকাল শনিবার যানজট তীব্রতর হয়। এর মধ্যে শনিবারের যানজটে পাবনা-ঢাকা পথে যাতায়াতকারী অনেক বাস আটকে পড়ে। এতে পাবনা, বেড়াসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঢাকাগামী বাসের সংকট দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাগামী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের ফেরি পারাপার বেছে নেয়। এতে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কাজীরহাট ফেরিঘাটে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনের চাপ আছে।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আগে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে ৪টি ফেরি চলাচল করত। ঈদ উপলক্ষে এখন আরও ২টি ফেরি বাড়িয়ে মোট ৬টি ফেরি করা হয়েছে। এগুলো হলো ২টি রো রো ফেরি শাহ আলী ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এবং ৪টি সেমি রো রো ফেরি বাইগার, গৌরী, চিত্রা ও ধানসিঁড়ি। এই ৬টি ফেরি দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহনের চাপ সামলানো যাচ্ছে। বাসসহ যানবাহনগুলোকে ফেরিঘাটে বেশি দেরি করতে হচ্ছে না।’
কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকামুখী আলহামরা পরিবহনের যাত্রী আবু হানিফ বলেন, ফেরিতে ওঠানামা মিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। আর আরিচা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেমন যানজট ছিল না। খুব ভালোভাবে ঢাকা পৌঁছাতে পেরেছেন। অথচ আরও দুই ঘণ্টা আগে রওনা দিয়েও তাঁর পরিচিত একটি পরিবারকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে ৫-৬ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল শনিবার। আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হলেও যানবাহনগুলো ভালোভাবে পার করে দিয়েছি। শনিবার আমাদের এই ঘাট হয়ে ফেরিতে ১০১টি বাস, ৪০১টি ছোট গাড়ি ও ৮০টি ট্রাক পার হয়েছে। আর আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৫টি বাস, ১৬টি ট্রাক, ৪২টি ছোট গাড়ি ও ২০০টি মোটরসাইকেল পার হয়েছে।’
বেড়া ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহনের বেড়া শাখার ব্যবস্থাপক বরকত আলী বলেন, ‘যমুনা সেতুর যানজটে আমাদের কয়েকটি বাস এখনো আটকে আছে। এতে নির্ধারিত সময়ে শুধু আমাদের বাসই নয়, অন্য কোম্পানির বাসগুলোও ঢাকার উদ্দেশে ছাড়তে পারছে না। আর কোনো বাস ঢাকা থেকে বেড়া এসে পৌঁছানোর পর সেই বাস এখন থেকে আমরা কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। বতর্মান অবস্থায় এই পথে যাতায়াতে যাত্রীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।’