আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে জাতীয় সচিবালয় এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তাঁরা আওয়ামী লীগসহ দলটির অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে গণহত্যা ও জুলাই গণহত্যাসহ সব অপকর্মের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।

আজ সোমবার বেলা ২টার পর শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তবে সচিবালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানালে শিক্ষার্থীরা রাস্তার বিপরীত পাশে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল আইন উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করেছেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। দলে আরও রয়েছেন সাদিক আল আরমান, রাফিদ এম ভুইয়া, সালেহ মাহমুদ রায়হান এবং মাসুদ রানা।

স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ে প্রবেশের আগে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এর আগে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাষ্ট্রের কাছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ এবং জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার দাবি জানিয়েছি। আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার চেয়েছি। কিন্তু, সরকার কর্ণপাত করেনি। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চান না, এটিকে সমীচীন মনে করেন না। সর্বশেষ ফরমাল প্রক্রিয়া হিসেবে আমরা স্মারকলিপি নিয়ে এসেছি। এরপরও দাবি আদায় না হলে আমরা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’


মোসাদ্দিক জানান, তারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন এলাকার গ্রুপকে এক করার চেষ্টা করা হয়েছে। আন্দোলন শুরু করার প্রক্রিয়া হিসেবে স্মারকলিপি নিয়ে আসা হয়েছে। দাবি মেনে না নিলে শিগগিরই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম রকল প অবস থ ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী 
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী