মঙ্গলবারের ঘটনা সম্পর্কে কোহিনুর কেমিক্যালের বক্তব্য
Published: 23rd, April 2025 GMT
ধর্ম অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক অবরোধের ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে কোহিনুর কেমিক্যাল।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি বলে, ‘কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড বাংলাদেশের ৭০ বছরের অধিক পুরোনো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। এটি দেশের নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তের ক্রয়-ক্ষমতার ভেতরে গুণগত মানসম্পন্ন সাবান, প্রসাধনী সামগ্রী ও ডিটারজেন্ট উৎপাদন ও বিপণন করে।’
এতে বলা হয়, ‘প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে একটি মসজিদ আছে, যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ আদায় এবং অন্যান্য ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ২০ এপ্রিল একজন কর্মকর্তা তার অধীনস্থ সহকর্মীর সঙ্গে ধর্মীয় বিষয়ে আলোচনার মধ্যে কিছু আপত্তিকর প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন, যা স্বভাবতই একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অনুভূতিতে আঘাত করে। পরে ২২ এপ্রিল দুপুরে শ্রমিকরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের শুনানি করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পান এবং বহিষ্কারাদেশ দেন। এছাড়া, প্রশাসন তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাস দেন। ইতোমধ্যে কিছু বহিরাগতের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।’
কোহিনুর কেমিক্যাল কখনোই কোনো ধর্মীয়, সামাজিক অথবা জাতীয়তার প্রতি বিদ্বেষমূলক কথা বা আচরণ সমর্থন করে না উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান শূন্য সহিষ্ণু নীতি অবলম্বন করে। এই প্রতিষ্ঠান দেশের প্রচলিত আইন সার্বিকভাবে ধারণ করে এবং এটি রক্ষায় বদ্ধপরিকর।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় ও তাঁদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পেহেলগামের হামলাকে ব্যবহার করে দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন আরও বৃদ্ধি করছে।
কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন বাদে বাকি প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পর্যটক হিসেবে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে।
পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জবাবে ভারত সামরিকভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে।
এই মুহূর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন আন্তসীমান্ত নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিজেপি সরকার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমদের হয়রানি করছে। তারা এটিকে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান’ বলে দাবি করছে।
মোদির বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা অনেক সময়েই হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকে।
উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক—এই দুই রাজ্যে মুসলিমদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের খবরে সেগুলোকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রায় দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা অনেকটা সমষ্টিগত শাস্তির মতো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি