পত্রিকা বিক্রেতাকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই
Published: 25th, April 2025 GMT
প্রায় ২০ বছর ধরে গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করতেন আনিস মিয়া ঠান্ডা। সংসারের অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর জন্য সকালে পত্রিকা বিক্রির পর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালাতেন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে তার রক্তাক্ত মরদেহ সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
স্বজনদের দাবি, আনিস মিয়াকে হত্যা করে তার ইজিবাইক নিয়ে পালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
আনিস গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কিশামত ফলিয়া গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে।
নিহতের প্রতিবেশী সুজন মাস্টার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন আনিস। রাত দেড়টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে কয়েকজন সন্ত্রাসী যাত্রী সেজে আনিসের ইজিবাইকে ওঠেন। তারা আনিসকে গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের দিকে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর ওই ব্যক্তিরা আনিসের কাছে ইজিবাইকের চাবি চান। চাবি না দেওয়ায়, আনিসের সঙ্গে তাদের প্রথমে ধ্বস্তাধস্তি হয়। পরে তারা ছুরি দিয়ে আনিসের পেটে আঘাত করেন। আনিসকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে তারা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান।
শুক্রবার ভোরে এক পথচারী আনিসকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে চিনতে পারেন এবং বাড়িতে খবর দেন। পরে তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আনিসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে আনিস মারা যান।
নিহতের চাচাতো ভাই রুহিল মিয়া জানান, আনিসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখেছে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে তারা। লাশ দাফনের পর গাইবান্ধায় হত্যা মামলা করবে পরিবার।
গাইবান্ধা পত্রিকা বিতানের স্বত্তাধিকারী আব্দুর রহমান জানান, আনিস দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা শহরে পত্রিকা বিক্রি করতেন। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “স্টেডিয়াম এলাকায় এক যুবক সন্ত্রাসীদের আঘাতে মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।