শিল্পী আবু সেলিম দেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের ভয়াবহ দৃশ্য তুলে ধরেছেন তাঁর শিল্পকর্মে। অবাধে চলছে বৃক্ষনিধন। নদী ভরে গেছে পলিথিন আর হরেক রকম দূষণে। দূষিত হচ্ছে বায়ু। শহরে যানবাহনের উচ্চ শব্দের হর্নে কানে তালা লেগে যায়। পরিবেশদূষণের এমন ভয়াবহ বিষয়গুলো নিয়ে শুরু হয়েছে তাঁর ‘পরিবেশ বাঁচাও’ নামের একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের ‘গ্যালারি জুম’–এ তাঁর এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন পরিবেশ রক্ষার ওপর বিশেষ জোর দিয়ে কাজ করছে।

বিশেষ অতিথি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, পরিবেশদূষণ যে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা আবু সেলিম শিল্পকর্মের ভেতরে তুলে ধরেছেন। এতে জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাপার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর ও আলিয়ঁস ফ্রসেঁজের পরিচালক ফ্রাঁসোয়া গ্রুস।

প্রদর্শনীতে জলরঙে আঁকা ১৮টি শিল্পকর্ম রয়েছে। শিল্পী আবু সেলিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্নাতক। পরিবেশ নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। জলরঙের কাজে তাঁর রয়েছে বিশেষ পারদর্শিতা। এটি ১৬তম একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। রোববার ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আগামী ৬ মে পর্যন্ত চলবে।

ক্যালিগ্রাফির ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী

পয়লা বৈশাখ থেকে নববর্ষ উপলক্ষে বাংলা ক্যালিগ্রাফির এক ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী চলছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের ‘লা গ্যালারি’তে। শিল্পী আরহাম উল হক চৌধুরীর ‘দলিলে দৃশ্যপট’ নামের এই প্রদর্শনী আজ শনিবার শেষ হবে। খোলা থাকবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আরহাম-উল-হকের এটি ২০তম একক ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী। এতে ৩১টি ক্যালিগ্রাফি রয়েছে। ব্যতিক্রম হলো, সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে ব্রিটিশ ভারতের সময়ের পুরোনো বিভিন্ন দলিলের ওপর তিনি বাংলার প্রবাদগুলো লিখেছেন শৈল্পিক আঙ্গিকে। প্রবাদগুলো যেসব বিষয়ে, সেই বিষয়কে নকশা করে অক্ষরগুলো লিখেছেন তিনি। ফলে এক ভিন্নমাত্রা সৃষ্টি হয়েছে তাঁর কাজে। সঙ্গে প্রাচীন দলিলগুলো স্মৃতিময় ব্যঞ্জনা যোগ করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল পকর ম প রদর শ পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ