আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আপ বাংলাদেশের মিছিল
Published: 26th, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পাশাপাশি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির প্রতিবাদ জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দলটিকে নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকার পানির ট্যাংক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আপ বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সমাবেশে প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম উদ্যোক্তা আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ দেশের রাজপথে মিছিল করার অধিকার কোথায় পেল? এ সরকারকে মনে রাখতে হবে, তারা শহীদ ভাইদের রক্তের ওপর ক্ষমতায় এসেছেন। সুতরাং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার এ দেশে থাকতে পারে না।
আরেক উদ্যোক্তা রাফায়েত সালমান বলেন, ফ্যাসিবাদ–পরবর্তী বাংলাদেশের ৯ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এখন আবার দেখা যাচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের বিভিন্ন দল ও তাদের সহযোগী অঙ্গসংগঠনের ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্নভাবে ঢাকা শহর ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার চেষ্টা করছে। ঝটিকা মিছিল করছে।
রাফায়েত সালমান আরও বলেন, ৫ আগস্ট দেশের মানুষের রায়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ও শেখ হাসিনার রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার ও খুনি হাসিনার বিচারের কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান, দ্রুত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিচার করে দেশের মাটিকে অপরাধীমুক্ত করতে হবে।
মিছিলে ‘ বিচার চাই বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি, নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনআলোচিত সাবেক শিবির নেতাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘আপ বাংলাদেশ’, সাড়া পেলে হবে দল১০ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ