কাজ করতে গিয়ে জাফর ইকবালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ববিতা। সুদর্শন, স্মার্ট ও স্টাইলিশ নায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ নায়কের সঙ্গে প্রেমের কথা অকপটে স্বীকারও করেছেন বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি মারা যান জাফর ইকবাল। গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে ববিতার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যান তিনি। পরবর্তী সময়ে অগোছালো, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ নানা কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত হন এই নায়ক। শেষ সময়ে ববিতাও জানতে পেরেছিলেন জাফর ইকবালের ক্যানসারের খবর।

আরও পড়ুনমেসেঞ্জারে আলাপটা ভালোই জমে উঠেছিল.

..বিব্রত ববিতা২৩ এপ্রিল ২০২৫

জাফর ইকবালের শেষ সময়ের দিনগুলো নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় ববিতার। জানান, শেষদিকে শুটিংয়ে অমনোযোগী হয়ে উঠেছিলেন জাফর ইকবাল। শুটিংয়ে দেরি করে আসা থেকে ঠিকমতো সময় দিতেন না তিনি। তাই ওই সময়ের অনেক প্রযোজক তাঁকে সিনেমায় নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইতেন না। প্রযোজকদের বুঝিয়ে বাদল খন্দকারের একটি ছবিতে জাফর ইকবালের দায়িত্ব নেন ববিতা। সেবারই শেষবারের মতো দুজন একসঙ্গে শুটিং করেন।
শুটিং সেটেই অনেক দিন পর তাঁদের দেখা হয়। দুদিন শুটিং হয়েছিল সিনেমাটির। শুটিংয়ের একটি দৃশ্য ছিল এ রকম, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন জাফর ইকবাল আর ববিতা চিকিৎসক। সেদিন সত্যি সত্যিই শরীরে ক্যানসার নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অভিনয় করেছিলেন জাফর ইকবাল। কাউকে কিছু জানাননি তিনি। তবে সেদিন ববিতার চোখে জাফর ইকবালকে দেখাচ্ছিল বেশি উদাসীন, অগোছালো। মনে হচ্ছিল, অসুস্থ। জিজ্ঞেসও করেছিলেন, ‘আপনাকে এমন কেন দেখাচ্ছে? অসুস্থ নাকি?’ তবে উত্তরে জাফর ইকবাল কী জানিয়েছিলেন, তা বলেননি তিনি।

‘অবুঝ হৃদয়’ ছবিতে জাফর ইকবাল ও ববিতা

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ