জুয়ার সাইট-অ্যাপ ও জড়িতদের খুঁজতে কমিটি গঠনের নির্দেশ
Published: 27th, April 2025 GMT
বিজ্ঞাপন প্রচারসহ অনলাইনে জুয়া/বেটিংয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করা, এগুলোর কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়, তা নির্ণয় এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত করে ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।
‘অনলাইন জুয়ার প্রচারণায় তারকারা’ শিরোনামে ৯ এপ্রিল প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমস এবং সামাজিক ও মূলধারার মাধ্যমে তারকাদের এসব বিজ্ঞাপন প্রচারের বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে তানজিম রাফিদ নামে রাজধানীর এক বাসিন্দা ১৬ এপ্রিল রিটটি করেন। আজ রিটের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী।
পরে আইনজীবী মাহিন এম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধানকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। হাইকোর্ট সাত বিবাদীর একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে; কমিটি বিশেষজ্ঞদের মতামতও নিতে পারবেন। বিজ্ঞাপন প্রচারসহ অনলাইনে জুয়া/বেটিংয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করা, এগুলো কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং এগুলোর সঙ্গে কারা জড়িত, তা তদন্ত কমিটিকে খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। আদালতে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’
সাত বিবাদীকে সাতজন প্রতিনিধি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কোন কোন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন অনলাইনে জুয়া/বেটিং হয়, তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে তদন্ত কমিটিকে।’
সংবিধানে ১৮(২) ও ৩১ অনুচ্ছেদ, সংশ্লিষ্ট আইনের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে জনপ্রিয় তারকদের মাধ্যমে কোনো সামাজিক ও মূল ধারার মাধ্যমের প্লাটফর্মে অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমের কার্যক্রম ও বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ধরনের অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমের বিজ্ঞাপন প্রচারের বিস্তার বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অন্যতম শোবিজ তারকা ও মডেল পিয়া জান্নাতুল। তিনি আইন পেশায়ও আছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বেশ জনপ্রিয়। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীসংখ্যা ১৭ লাখ। ইনস্টাগ্রামে ১১ লাখ। পিয়া নিজের মডেলিং–জীবনের পাশাপাশি নানা সময় সামাজিক ও আইনি পরামর্শমূলক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন। তবে তাঁকে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালাতেও দেখা গেছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ১২টি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালিয়েছেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে। শুধু পিয়া নন, চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী, অভিনয়শিল্পী সামিরা খান মাহিও অনলাইন জুয়ার প্রচারণা চালিয়েছেন। দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও আছেন এই তালিকায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল