এস আলমের আরও ৫৬৩ একর জমি জব্দের আদেশ
Published: 27th, April 2025 GMT
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে থাকা ৫৬৩ দশমিক ৫৭ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়, এসব জমির দলিল মূল্য ১ হাজার ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
আজ রোববার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাতপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্থান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির পূর্বে সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে ওই টাকা উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পড়বে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ১৫৯ দশমিক ১৫ একর জমি জব্দের আদেশ দেন ঢাকার আদালত। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থিত। আর এসব জমির বর্তমান বাজার মূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেন।
তার আগে গত ১৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ১ হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে ২ হাজার ৬১৯ কোটি ৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ১০ মার্চ এস আলমের ১ হাজার ৬ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এস আলম গ র প অবর দ ধ এস আলম
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড় সীমান্তে গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
পঞ্চগড় সীমান্তে গুলিবিদ্ধ যুবক মারা গেছেন। শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে আহতাবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহতের নাম রাজু ইসলাম (৩৫)। তার বাড়ি হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। রাজু সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু পারাপারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ঘাগড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর বিপরীতে ভারতীয় এলাকার কিছু যায়গায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় এলাকাটি ভারতীয় গরু পারাপারের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে চোরাকারবারিরা। শনিবার মধ্যরাতে এই মেইন পিলারের ৩ নম্বর সাব পিলার সংলগ্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন রাজু। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্যাম্পের সদস্যরা তার দুই পায়ে গুলি করে। ঘটনাস্থলের পাশেই রাজুর বাড়ি হওয়ায় গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই রাজু বাড়ি ফেরেন। পরে আহতাবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। রবিবার দুপুরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
হবিগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
এদিকে রাজুর মৃত্যু বিএসএফের গুলিতে নয়, হার্ট অ্যাটাকে হয়েছে বলে দাবি করেছেন নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে পুলিশ বলছে, প্রাথমিক সুরতহালে মরদেহের পায়ে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজুর হৃদরোগ থাকলেও তার মৃত্যু বিএসএফের গুলিতে হয়েছে। তার দুই পায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে।’’
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, ‘‘খবর পেয়ে রাজুর বাড়িতে পাই। তার দুই পায়ে ক্ষত চিহ্ন দেখেছি। ধারণা করছি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক বছরে ঘাগড়া সীমান্তে এমন পাঁচ জনের মৃত্যু হলো।’’
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা বলেন, ‘‘গত রাতে বর্ডারে কোনো গোলাগুলি হয়নি- এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সেখানে বিজিবির পেট্রোল টিম ছিল, আশপাশে বাড়িঘর ছিল। বিএসএফ গুলি করলে শব্দ শোনা যেত, তারা কেউ কোনো শব্দ শোনেনি। চোরাকারবারি দমনে বিএসএফ অনেক সময়েই ফায়ার করে, আমরা সব সময় এসবের প্রতিবাদ করি। যদিও তারা বিভিন্ন সময় বলে, আত্মরক্ষার্থে ফায়ার করে। এ ক্ষেত্রে ফায়ারের শব্দ অনেক দূর পর্যন্ত শোনা যায়। কিন্তু, গত রাতে কোনো শব্দ শোনা যায়নি। আমরা বিএসএফের সঙ্গেও কথা বলেছি, তারাও জানিয়েছে কোনো ফায়ার হয়নি। এরপরও সৌজন্য সাক্ষাতে এ বিসয়ে আমরা তাদের আরো জিজ্ঞেস করব।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রাজুর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাদের জানিয়েছেন, রাজু হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে জেনেছি, তার পায়ে নাকি গুলির চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু, এ বিষয়ে তারা আমাদের কিছুই জানায়নি।’’
এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ বলেন, ‘‘নিহতের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি চিকিৎসক বলতে পারবেন। এছাড়া, মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’’
এ বিষয়ে জানতে রাজুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকা/নাঈম/রাজীব