কাশ্মীর অঞ্চলে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের মধ্যে রবিবার টেলিফোনে আলোচনা হয়েছে।

ইসহাক দার চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-কে কাশ্মীর অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা সম্পর্কে অবহিত করেন।

তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এমন যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে। পাকিস্তান পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং চীন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখবে।”

আরো পড়ুন:

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন
পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলি

জবাবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, চীন এই ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সমগ্র বিশ্বের দায়িত্ব এবং পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ দমনে যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, চীন তার প্রতি সমর্থন জানায়।”

ওয়াং ই আরও বলেন, “একজন সত্যিকারের বন্ধু এবং সর্বকালীন কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদার হিসেবে, চীন পাকিস্তানের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগগুলো সম্পূর্ণরূপে বোঝে এবং তার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষায় পাকিস্তানকে সমর্থন করে।”

তিনি দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের পক্ষে মত দেন এবং বিশ্বাস করেন যে, এই সংঘাত ভারত বা পাকিস্তান কারোরই মৌলিক স্বার্থে কাজ করে না, এমনকি এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও ক্ষতিকর।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, উভয়পক্ষই সংযত থাকবে, একে অপরের দিকে এগিয়ে যাবে এবং পরিস্থিতির উত্তেজনা কমাতে একসাথে কাজ করবে।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ