জলবায়ু সংকট ন্যায়বিচার সংশ্লিষ্ট সংকটও বটে: প্রধান বিচারপতি
Published: 29th, April 2025 GMT
জলবায়ু সংকট কেবল পরিবেশগত জরুরি অবস্থা নয়, বরং এটি ন্যায়বিচার সংশ্লিষ্ট একটি সংকটও বটে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ইতিহাস পর্যালোচনায় উন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখলেও আজ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের মুখে পড়েছে তুলনামূলকভাবে কম কার্বন নিঃসরণকারী উন্নয়নশীল দেশগুলো।
প্রধান বিচারপতি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ‘ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যান্ড দ্য কনস্টিটিউশন: রিফ্লেকশন ফ্রম দ্য গ্লোবাল সাউথ’ শীর্ষক এক বিশেষ অনুষ্ঠানে গতকাল সোমবার এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আবুধাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক পাবলস এলেফথেরিয়াডিস। সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো.
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন স্থায়ী আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষত বিপজ্জনক শিল্পগুলোর ক্ষেত্রে, যেমন জাহাজভাঙা শিল্পে পরিবেশগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রায় দেওয়ার বিষয় উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সহায়তায় শক্তিশালী আর্থিক ও আইনি কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।
প্রধান বিচারপতি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের বাস্তুচ্যুতি, ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণ বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে একটি বৈশ্বিক নৈতিক মানদণ্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে বাস্তুচ্যুত জনগণের জীবন, আশ্রয় ও জীবিকা সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম এমন আইনগত কাঠামো প্রবর্তনের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিচারক ও আইনজীবীদের প্রতি বার্তা দিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচার এখন আর কোনো বিলম্বিত আদর্শ নয়, বরং এটি একটি সাংবিধানিক অঙ্গীকার।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরে সঙ্গী হচ্ছেন ফখরুল, তাহেরসহ চার রাজনীতিবিদ
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে যাবেন চারজন রাজনীতিবিদ। তাঁরা হলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মহাসচিব আখতার হোসাইন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরের বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
দেশের বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চারজন রাজনীতিবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা। ২২ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন। তিনি দেশে ফিরবেন ২ অক্টোবর।
২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দেবেন জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বিগত এক বছরে দেশে ঘটে যাওয়া সংস্কার ও আগামী দিনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এমন একটি উচ্চ পর্যায়ের সভার আয়োজন এবারই প্রথম। এই উচ্চ পর্যায়ের সভা থেকে যেন রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের একটি কার্যকর পরিকল্পনা উঠে আসে, সেজন্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গত মাসে কক্সবাজারে একটি অংশীদার সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ প্রমুখ।