অ্যাড্রিনাল ক্রাইসিস দেখা দিলে মৃত্যুও হতে পারে, তাই যেসব বিষয় জেনে রাখা জরুরি
Published: 30th, April 2025 GMT
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির অবস্থান আমাদের দুই কিডনির ঠিক ওপরে। এ গ্রন্থি থেকেই জীবনধারণের অত্যাবশ্যক কর্টিসল হরমোন নিঃসৃত হয়। কোনো কারণে কর্টিসল হরমোন তৈরি কম হলে তাকে অ্যাড্রিনাল ইনসাফিসিয়েন্সি বলে। কর্টিসল হরমোন তৈরি বিপজ্জনকহারে কমে গেলে জীবনসংকট দেখা দিতে পারে। আর এই পর্যায়টাকেই অ্যাড্রিনাল ক্রাইসিস বলে।
কাদের হয়
অনেকেই চর্মরোগ, শাসকষ্ট, বাতব্যথা বা নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ওষুধ খান। তাঁদের দেহে কর্টিসল হরমোন তৈরির ক্ষমতা কমে যায়। তারপর একদিন হঠাৎ স্টেরোয়েড বন্ধ করলে কর্টিসলের তীব্র ঘাটতির কারণে অ্যাড্রিনাল ক্রাইসিস দেখা দেয়। যেহেতু কেউ কেউ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অনেক সময় স্টেরয়েড কিনে খান, তাই আমাদের দেশে এটিই অ্যাড্রিনাল ক্রাইসিসের সবচেয়ে বড় কারণ। এ ছাড়া যাঁরা অন্যান্য কারণে অ্যাড্রিনাল ইনসাফিসিয়েন্সিতে ভুগছেন (যেমন অ্যাড্রিনাল টিবি, অটোইমিউন ডিজিজ) এবং এ জন্য নিয়মিত স্টেরয়েড সেবন করতে হচ্ছে, তাঁদের অসুস্থতায় অ্যাড্রিনাল ক্রাইসিস দেখা দিতে পারে।
কী কারণে হয়
দীর্ঘদিন স্টেরয়েড বা অ্যান্টিফাঙ্গাল–জাতীয় ওষুধ সেবন (চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া), অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির যক্ষ্মা, অটোইমিউনিটি, টিউমার, প্রদাহ, মাথার টিউমার, মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস ইত্যাদি কারণে এ রোগ হয়ে থাকে।
উপসর্গ কী
এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে—প্রচণ্ড দুর্বলতা, মাথা ঘুরানো, চোখে ঝাপসা দেখা, হাত–পা অবশ হয়ে আসা, রক্তচাপ ও রক্তের সুগার কমে যাওয়া, তীব্র ক্ষুধামান্দ্য, বমি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
যা করতে হবে
অ্যাড্রিনাল ক্রাইসিস একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি। এমন রোগীকে অতিসত্বর হাসপাতালে আনার পর দ্রুত শিরাপথে স্যালাইন ও কর্টিসোল ইনজেকশন দেওয়া একান্ত জরুরি।
যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড সেবন করছেন, তাঁরা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে কী করণীয়, এই নির্দেশাবলি–সংবলিত স্টেরয়েড কার্ড অবশ্যই সব সময় নিজের সঙ্গে বহন করবেন। একটি স্টেরয়েড কার্ড জরুরি মুহূর্তে আপনার জীবন বাঁচাতে পারে।
ডা.
অঞ্জনা সাহা, হরমোন ও ডায়াবেটিস রোগবিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ট স
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।