আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
Published: 30th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে এখনো আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে তাদের ব্যবসা পরিচালনা ও দাপট দেখিয়ে যাচ্ছে। এরা ভুমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি, মাদকদ্রব্য থেকে শুরু করে স্থানীয় এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে আসছে বলে এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে।
অনেকের ধারনা গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র জনতার উপর হামলা করা অবৈধ অস্ত্রগুলো এখনো এ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সুরক্ষিত রয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে তল্লা, হাজীগঞ্জ, পাঠানটুলী এলাকায় ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীর এ সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি চলছে পূর্ণোদ্যমে। বুক ফুলিয়ে তার সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এখনো।
এ সূত্র ধরে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি খালিদ মনসুরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গুপ্তি মেরে থাকা বা কারো ছত্রছায়া থাকা এ ধরনের আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রশাসনের কাছেও তথ্য রয়েছে। এই পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান। ক্রমান্বয়ে সব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার হাজীগঞ্জের মাসুম প্রকাশ্যে এখনো বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং এলাকাবাসীদের জিম্মি করে তার নেট ব্যবসা পরিচালনা করে চলছে। নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের হিংস্রতার কথা সকলেরই কমবেশি জানা।
প্রায় ১৭ বছর নারায়ণগঞ্জটিকে দখল করে রেখেছিল তারা। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা তো দূরের কথা, চিন্তা করলেও হতে হতো হামলা এবং মামলার শিকার।
নারায়ণগঞ্জ তথা প্রতিটা পাড়া মহল্লাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য এক একটা ক্যাডার গ্যাং তৈরি করে রেখেছিলো আজমেরী উসমান। এই বাহিনী গুলি ভাইয়াজান ও আম্মাজান পরিচয় দিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরজুড়ে দাবরিয়ে বেড়াতো।
তার নির্দেশনায় চলতো ওই বিশাল বাহিনীর বহর। বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে দেওয়া হয়েছিল একটি করে ইজিবাইক এবং বাইকের মাথায় স্টিকার ছিল আজমির ওসমান ফাউন্ডেশন।
এ গ্রুপের সদস্যরা জবরদখল ভূমিদস্যুতা, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ এমন কোন অপকর্ম ছিল না যা তাদের দাঁড়া অসম্ভব ছিলো । তাদের দেখলে সাধারণ জনতা থাকতো আতঙ্কে।
কারণ তাদের সাথে সামান্য কিছু ঘটলেই চলে আসতো বিশাল বিশাল হুন্ডা বাহিনী । তাদের কথার অবাধ্য হলেই করা হতো সাধারণ মানুষকে নাজেহাল, শারীরিক টর্চা।
তবে হাজিগঞ্জ, পাঠানটুলি, তল্লা, এনায়েত নগর এই অঞ্চলগুলিতে একটি বাহিনীর নেতৃত্ব স্থানে ছিলেন হাজীগঞ্জ এলাকার মাসুম ও রাজু এরা দুজন। মাসুম ও রাজুকে আজমিরী ওসমান ওরফে ভাইয়া জান এবং তার মা আম্মাজান নিজেই এই গ্রুপটাকে পরিচালনা করত। অনেকের মতে আম্মাজানের অর্থের যোগানদাতা ছিল এরা দুইজন।
রাজু কিছুটা নিরব থাকলেও প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ভূমিদস্যুতা এবং সব অপকর্ম করে চলছে মাসুম । মাসুম জাতীয় পার্টি যুব সমাজের নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক।
৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নারায়ণগঞ্জের গডফাদার এ.
কিছুদিন ডুবদিয়ে থাকলেও এই মাসুম এখন আবার এলাকায় প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে। সে তার সুবিধার জন্য ব্যবহার করছে কিছু সাংবাদিক ও স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের নাম। অত্র এলাকার মানুষ হতবাক কিভাবে এত বড় সন্ত্রাসী এখনো প্রকাশে ঘোরাফেরা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূমিধস্যু চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য ছাড়াও হাজিগঞ্জ, তল্লা, পাঠানতলী, এনায়েত নগর ওয়াবদারপুল ও এমসারকেস এই এলাকাগুলোতে মাসুম ও রাজুর একক নিয়ন্ত্রণে একেএম শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে ইন্টারনেট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার করতো, যা এখনো বহাল।
বিশেষ পেশার কয়েকজন ও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীর ছত্রছায়া এই ব্যবসা এখনো চলমান বলে জানা যায়। যার সেন্টার দাতা ছিল এটিএম শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমান।আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
নারায়ণগঞ্জ টাইমস সর্বশেষ জনপ্রিয় ১আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
সোনারগাঁয়ে অটোরিকশা-পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার মেয়ের মাদক সেবনের ভিডিও ভাইরাল
নবায়নযোগ্য শক্তির দাবিতে সোনারগাঁয়ে মানববন্ধন
সোনারগাঁয়ে চোর আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
বন্দরে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে যুবককে হত্যা
বন্দরে সোহান হত্যা মামলার আসামি কাজলকে আদালতে প্রেরণ
বন্দর প্রেসক্লাবের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.কম
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: শ ম ম ওসম ন স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ওসম ন র স ন রগ আওয় ম ব এনপ ব যবস আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।