অসুস্থ বন্য হাতির চিকিৎসা করলো বন বিভাগ
Published: 1st, May 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে দাওধারা কাটাবাড়ী পাহাড়ি এলাকায় বল্লমের আঘাতে অসুস্থ পড়া এক বন্য হাতিকে চিকিৎসা দিয়েছে বন বিভাগ। এতে দ্রুত হাতিটি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে হাতিটিকে চিকিৎসা দেয়ার সময় ভিডিও করে স্থানীয় কিছু শিক্ষার্থী। এতে প্রাণি প্রেমীদের প্রশংসায় ভাসছে বন বিভাগ।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলার গারো পাহাড়ি এলাকায় শতাধিক বন্য হাতি কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে ঘোরাঘুরি করছিল। এসব বন্য হাতি খাদ্যের সন্ধানে কখনো ধানখেতে, কখনো বা লোকালয়ে হানা দেয়। ফসল ও বসতবাড়ি রক্ষা করতে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আবার কেউ কেউ ধানখেতে জেনারেটর বা বৈদ্যুতিক তার দিয়ে ফাঁদ পেতে ক্ষুধার্ত হাতিগুলোকে থামাতে চেষ্টা করে। এ সময় বাইরে থেকে লোকজন বন্য হাতি দেখতে আসে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাতি তাড়াতে যোগ দেন তারা এবং কখনো কখনো পাথর ছুড়ে মারে। কিংবা দেশীয় কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
আরো পড়ুন:
সুন্দরবনে আগুনের তীব্রতা কমলেও নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ
সুন্দরবনের নতুন এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দাওধারা কাটাবাড়ী পাহাড়ে নির্মাণাধীন নতুন পর্যটন এলাকার পাশে এমনই এক আঘাতপ্রাপ্ত বন্য হাতিকে দেখতে পান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে তারা বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেয়। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ও মেডিকেল টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত ১০–১২ বছরের ওই মাদি বন্য হাতিকে চিকিৎসা দেয়। প্রায় ৩–৪ মাস আগে বল্লমজাতীয় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ওই হাতিকে আঘাত করা হয়েছিল। ৩–৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ওই আঘাতের গভীরতা প্রায় ৬ ইঞ্চির মতো।
এ সময় নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন সাকিব হোসেন সাগর, গাজীপুর সাফারি পার্কের ল্যাব টেকনিশিয়ান আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহকারী টেকনিশিয়ান মোস্তফা কামাল, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.
মেডিকেল টিমের প্রধান গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আঘাতের কারণে হাতিটি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তার দেহের মেজর কিছু টিস্যু ড্যামেজ হয়ে গিয়েছে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থান ড্রেসিং করে তার দেহে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাকে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করেন, দ্রুতই হাতিটি সুস্থ হয়ে উঠবে।
ঢাকা/তারিকুল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বনভ ম কর মকর ত বন য হ ত বন ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ
জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।
গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি।
উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।
এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।