বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ১০৪তম জন্মদিন আজ। অসাধারণ সব চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। তাঁর সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’ অস্কারসহ দুনিয়াব্যাপি খ্যাতি লাভ করে। 

সত্যজিৎ রায় মোট ৩৭ টি ছবি পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- অপরাজিত, পরশপাথর, জলসাঘর, অপুর সংসার, দেবী, তিনকন্যা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, অভিযান, মহানগর, চারুলতা, গুপী গাইন বাঘা বাইন, হীরক রাজার দেশে, অরণ্যের দিনরাত্রি, অশনি সংকেত, জয়বাবা ফেলুনাথ, সোনার কেল্লা, ঘরে-বাইরে, গণশত্রু, শাখা-প্রশাখা, আগন্তুক। এসব চলচ্চিত্র অনেকেরই অনেকবার করে দেখা। 

চলচ্চিত্র নির্মাণের বাইরেও তিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সংগীত পরিচালক, কল্পকাহিনী লেখক, প্রকাশক, চিত্রকর, গ্রাফিক্স নকশাবিদ ও চলচ্চিত্র সমালোচক। সব কিছুতেই রয়েছে তার উজ্জল অবদান। প্রতিটি বিষয়েই তার প্রতিভাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। 

১৯২১ সালের ২ মে তাঁর জন্ম কলকাতায় হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তার ছিল আত্মিক সম্পর্ক। সত্যজিৎ রায়ের পূর্ব পুরুষরা ছিলেন বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার বড় মসুয়া গ্রামের অধিবাসী। 

তার পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর জন্ম বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে।  উপেন্দ্রকিশোর ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে তৎকালীন প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বৃত্তিও পেয়েছিলেন। তারপর কলকাতায় গিয়ে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। তিনি কলকাতায় চলে গেলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তার যোগাযোগ থেকেই যায়। সেই সূত্রে সত্যজিৎ রায়ের বাবা সুকুমার রায়ের বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলো। সত্যজিৎ রায়ের জন্মের ছয় বছর আগে মারা যান উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী, আর মাত্র আড়াই বছর বয়সে বাবাকে হারান সত্যজিৎ। তারপরও বাংলাদেশের সঙ্গে ছেদ পড়েনি তাদের। কারণ তার মামার বাড়ি ছিল ঢাকার ওয়ারীর র‍্যাংকিং স্ট্রিটে।

ঢাকার প্রথম আবাসিক এলাকা ছিল ওয়ারী। ছোটবেলায় দু-তিন দিন ঢাকায় ছিলেন সত্যজিৎ রায়। তখন তার বয়স মাত্র পাঁচ বা ছয় বছর। সত্যজিৎ রায়ের সেটাই ছিল সর্বপ্রথম ঢাকায় আসা। তিনি পরবর্তী বার যখন ঢাকায় এলেন তখন হয়ে উঠেছেন বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক, গুণী সাহিত্যিক। অন্যদিকে, বাংলাদেশ তখন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। সত্যজিৎ রায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয় ১৯৭২ সালের শহীদ দিবস উপলক্ষে। স্বাধীন বাংলাদেশে সে বছরই প্রথম পালিত হয় শহীদ দিবস। সত্যজিৎ রায়সহ ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী, সাহিত্যিক, পরিচালকরা ঢাকায় আসেন ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।

বাংলা সাহিত্যে সত্যজিৎ রায় একটা বড় জায়গা দখল করে আছেন। বিশেষ করে শিশুতোষ গোয়েন্দা কাহিনী ফেলুনাথ সিরিজ ছেলে-বুড়ো সবার প্রিয়। এছাড়া বিজ্ঞানী প্রফেসর শঙ্কুও দারুণ পাঠকপ্রিয়। তিনি একাধিক ছোট গল্প লিখেছেন।

১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন এই মহান চলচ্চিত্রকার। 

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন