ফ্লো সাইটোমেট্রি: রক্তরোগ চিকিৎসায় দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
Published: 3rd, May 2025 GMT
রক্তরোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘ফ্লো সাইটোমেট্রি: মৌলিক থেকে অ্যাডভান্সড’ শীর্ষক দুই দিনের এক কর্মশালা শুক্রবার শেষ হয়েছে। রাজধানীর একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার এ কর্মশালার আয়োজন করে ‘ইয়াং হেমাটোলজিস্টস অব বাংলাদেশ’। এতে অংশ নেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের রক্তরোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এনজি হেং জু ও সিংহেলথের আন্তর্জাতিক সহযোগী দপ্তরের পরিচালক বিজয়া রাও।
সমাপনী দিনে অংশগ্রহণকারী তরুণ হেমাটোলজিস্টদের হাতে সনদ তুলে দেন রেনাটা পিএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ এস কায়সার কবির। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বাংলাদেশের তরুণ রক্তরোগবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে কর্মশালার এ আয়োজন ছিল চমৎকার সম্পর্ক তৈরির উৎস। বিশেষ করে এখানে বাংলাদেশের ৮৭ তরুণ রক্তরোগবিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, রেনাটা পিএলসি এ অনুষ্ঠানের সায়েন্টিফিক পার্টনার হিসেবে রক্তরোগ গবেষণায় তরুণ চিকিৎসকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেছে।
বাংলাদেশ হেমাটোলজি সোসাইটির সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম বলেন, এ কর্মশালার মাধ্যমে তরুণ চিকিৎসকেরা আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হেমাটোলজি সোসাইটির সভাপতি আমীন লুৎফুল কবীর, সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দফা দাবিতে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ডাক
বাসযোগ্য কক্ষ বরাদ্দসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকেরা। রোববার বিকেলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা বলছেন, ইন্টার্ন হলের অধিকাংশ কক্ষ এখনো বসবাসের অযোগ্য। কিছু অংশে সংস্কারকাজ চলমান। এর মধ্যে প্রশাসনের নির্দেশে আবাসিক হলের কক্ষ থেকে তাঁদের জোর করে বের করে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল মধ্যরাতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে চার ঘণ্টার মধ্যে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে কক্ষের তালা ভেঙে তাঁদের মালামাল বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে তিন দফা দাবিতে তাঁরা কর্মবিরতির ডাক দিচ্ছেন।
দাবিগুলো হলো বাইরে বের করে দেওয়ার ঘটনার দায় স্বীকার ও প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও বাসযোগ্য আবাসিক কক্ষ নিশ্চিতকরণ ও বুঝিয়ে দেওয়ার সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করা।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসকেরা দিলরুবা হলে থাকতেন। তবে নতুন শিক্ষার্থীদের জায়গা করে দিতে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের বিবি আয়েশা হলে বরাদ্দ দেওয়া হয়। হলটি শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত ও বাসযোগ্য নয় বলে দাবি শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের। এর মধ্যে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের মালপত্র কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক পরিষদের কমিটি গঠন হয়নি। তবে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের নেতৃস্থানীয় তিনজনের সঙ্গে আলাপ করে কর্মবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁরা বলেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন।
এদিকে বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মারদিয়া আলম নামের এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে তিনি আজ সকাল আটটা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান। পরে হাসপাতাল থেকে নিজের কক্ষে ফিরে মালামাল কক্ষের বাইরে ফেলে রাখা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ভিডিও করেন বলে উল্লেখ করেন।
মারদিয়া আলম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের যে কক্ষ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো বাসযোগ্য নয়। সেগুলো দরজা-জানালা ছাড়া ও অপরিচ্ছন্ন। পানির ব্যবস্থা নেই এমন কক্ষ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কক্ষের মালামাল বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে আবাসিক হোটেলে উঠেছেন।
জানতে চাইলে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতির বিষয়টি তিনি জানেন না। তাঁদের আগেও একাধিকবার আলাদা হলে উঠতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা তাঁদের হলের কক্ষ ছাড়ছেন না। এমন অবস্থায় ১৭ জুন কলেজের ২৪৯ জন শিক্ষার্থী আবাসিক হলে উঠবেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের কক্ষ বরাদ্দ দিতে হবে। এ জন্য শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের আগে থেকেই বলা হচ্ছিল, তাঁদের বরাদ্দ করা হলে অবস্থান করতে। কিন্তু অনেকেই কথা শোনেননি। চূড়ান্ত সতর্কবাণী দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপর যাঁরা কক্ষ পরিবর্তন করেননি, তাঁদের বিষয়ে বাধ্য হয়ে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। এরপরও বিষয়টি তিনি বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখছেন বলে জানান।
রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। সন্ধ্যার পর থেকে তাঁরা এ কর্মসূচি শুরু করেন। এদিকে হাসপাতালের প্রশাসন বিভাগ ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষকেরা শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এমাদ উদ্দিন বলেন, তিন দফা দাবিতে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করছেন। রোববার হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে তাঁর দায়িত্ব ছিল। কর্মবিরতির ডাক দেওয়ায় তিনি কাজে যাননি।